চানখারপুলে বিএনপির কর্মী-পুলিশ সংঘর্ষ

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় পড়া শুরুর আগ মুহূর্তে রাজধানীর চানখারপুলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির একদল কর্মীর সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। পুলিশ এ সময় পাঁচ ছাত্রদল কর্মীকে আটক করে। এঁরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

এর আগে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর আদালত প্রাঙ্গণে আসার সময় কয়েক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংষর্ঘ হয়।
বেলা পৌনে দুইটার দিকে আদালতে পৌঁছান খালেদা জিয়া। গুলশানের বাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে পৌঁছায় খালেদা জিয়ার গাড়ি।
খালেদা জিয়ার গাড়িবহর রাজধানীর মগবাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে শত শত নেতা-কর্মী সঙ্গে যোগ দেন। এসব নেতা-কর্মী বহরের সঙ্গে যাচ্ছিলেন। তাঁরা কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে বেশ কিছু নেতা-কর্মী বহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এরপরও খালেদা জিয়ার গাড়ির পাশে হেঁটে হেঁটে নেতা-কর্মীরা যেতে থাকেন। বকশীবাজারে কাছাকাছি বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়ে ছিল। গাড়িবহর আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছানোর আগে বহরের সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীদের আর ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি। যে পথ দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে খালেদা জিয়ার গাড়ি যায়, তা গাড়ি প্রবেশের পরপরই বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
এ সময় বিএনপির কর্মীরা দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ট্রাফিক বক্সে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করে এখান থেকে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে আদালত বসেন। আশপাশ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। বকশীবাজার মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

খালেদা জিয়া ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান। মামলায় শুরু থেকে পলাতক আছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। গত ২৫ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আদালতের বিচারক আকতারুজ্জামান রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন।

এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ছয়জন আসামি। এই ছয় আসামির বিরুদ্ধে যেসব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, এতে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন, সর্বনিম্ন যেকোনো মেয়াদে কারাদণ্ড। এর সঙ্গে আর্থিক কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্য বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুদক এই মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশীদ। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আদালত খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯,১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ গঠন করেন।