১৫ প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত, বাকিদের রক্ষার আহ্বান

‘ফটোগ্রাফিক গাইড টু দ্য ওয়াইল্ডলাইফ অব বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রচ্ছদ।
‘ফটোগ্রাফিক গাইড টু দ্য ওয়াইল্ডলাইফ অব বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রচ্ছদ।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধ হওয়ায় এখানে নানা ধরনের বন্য প্রাণীর বসবাস। কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস হওয়া ও নির্বিচারে হত্যার শিকার হওয়ায় গন্ডার, হায়েনার মতো ১৫ ধরনের প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখনো যারা নানাভাবে টিকে আছে, তাদের জন্য বন্য পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের নানা ধরনের বন্য প্রাণীর আলোকচিত্র ও তথ্য নিয়ে তৈরি ‘ফটোগ্রাফিক গাইড টু দ্য ওয়াইল্ডলাইফ অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বক্তারা এসব কথা বলেছেন। আজ শনিবার প্রকৃতিবিষয়ক বেসরকারি সংস্থা আরণ্যক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বইটি প্রকাশ করে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খানের লেখা বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি হয় রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই কার্যালয়ে।
অনুষ্ঠানটিতে বক্তারা উন্নয়নের নামে শুধু কিছু অবকাঠামো করার পথ থেকে সবাইকে সরে আসার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, বন্য প্রাণীদের আবাসস্থল রক্ষা করতে হবে। বন্য প্রাণী রক্ষা পাওয়া মানে বন, জলাভূমি, নির্মল প্রকৃতি রক্ষা পাওয়া। আর এগুলো রক্ষা পেলে মানুষও সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। আয়োজকেরা বলেন, অধ্যাপক মনিরুল এইচ খানের ২০ বছরের মাঠপর্যায়ে বন্য প্রাণী পর্যবেক্ষণ, আলোকচিত্র তোলা ও গবেষণার সমাবেশ হচ্ছে এ বই। তবে এই বই পড়ে কেউ যদি বন্য প্রাণী রক্ষায় উদ্যোগী হয়, তাহলে এই বই প্রকাশ সার্থক হবে।
মনিরুল এইচ খান বলেন, একটি বিখ্যাত কথা আছে, ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’। এই কথাটি মনে রেখেই বন্য প্রাণীদের আবাসস্থল ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এখন উন্নয়ন শব্দটি শুনলে আমার ভয় লাগে। মনে হয়, এর মানে পাহাড় কেটে প্রকৃতি ধ্বংস করে কিছু ইমারত ও অবকাঠামো তৈরি করা। কিন্তু আমরা যদি প্রকৃতি এভাবে ধ্বংস করি, তাহলে নিজের অস্তিত্বই একসময় ধ্বংসের মুখে পড়বে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) কান্ট্রি ডিরেক্টর রাকিবুল আমিন।
বইটিতে ৭৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৫১৬ প্রজাতির পাখি, ১০৩ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৪৬ প্রজাতির উভচর প্রাণীর ছবি, শনাক্তকারী তথ্য ও বাংলাদেশে এদের বিস্তার সম্পর্কে তথ্য ও মানচিত্র রয়েছে।