ফারুকের শঙ্কা ছিল সাংসদ আমানুর তাঁকে হত্যা করবে

ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় আজ রোববার সাংসদ আমানুর রহমান খানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। ছবি: প্রথম আলো
ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় আজ রোববার সাংসদ আমানুর রহমান খানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অবশেষে আজ রোববার আদালতে হাজির করা হয়েছে সাংসদ আমানুর রহমানকে। তাঁর উপস্থিতিতেই মামলার বাদী নাহার আহমেদের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ।

এর আগে চারবার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত দিন ধার্য করলেও ‘অসুস্থতা’র কারণে আমানুরকে হাজির না করায় সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়ে যায়। টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন।

এই মামলার প্রধান আসামি আমানুরকে আজ সকাল পৌনে ১০টায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমানুরকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। টাঙ্গাইল কারাগারে আটক অপর আসামি আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, মো. সমির এবং জামিনে থাকা আসামি নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান ও ফরিদ আহমেদ আদালতে হাজির হন।

বেলা ১১টায় আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া নাহার আহমেদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। সাক্ষ্যে নাহার আহমেদ আদালতকে জানান, মৃত্যুর আগে ফারুক আহমেদ তাঁকে মাঝেমধ্যেই বলতেন, সাংসদ আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা তাঁকে মেরে ফেলতে পারেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে আমানুররা হত্যা করেছেন। এ সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত আমানুরসহ অন্য আসামিদের নাহার আহমেদ শনাক্ত করেন।

নাহার আহমেদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আমানুরের আইনজীবী আবদুল বাকি মিয়া তাঁকে জেরা শুরু করেন। পরে আংশিক জেরা হওয়ার পর আদালত আগামী ২০ মার্চ পুনরায় জেরা ও অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।

এ সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে সাংসদ আমানুর বলেন, আদালতে নিরাপত্তার অভাব আছে। নিরাপত্তা যথাযথ না হলে তাঁর আদালতে আসা সমস্যা। এ সময় অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি জানান, আমানুর রাষ্ট্রীয় হেফাজতে রয়েছেন। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এই হত্যায় সাংসদ আমানুর ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এই মামলায় সাংসদ আমানুর ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি রয়েছেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।

আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ

আমানুরকে আদালতে হাজির করার খবরে আদালত এলাকায় তাঁর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। আদালত এলাকায় বিক্ষোভ শেষে পথসভা করেন। তাঁরা দ্রুত বিচার দাবি করেন।