'সরকারপ্রধানের দুর্নীতির বিচারে অপরাধ কোথায়'
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, সরকারপ্রধান যদি দুর্নীতিবাজ হয়, তাঁদের যদি বিচার না হয় তাহলে সারা দেশ দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে। সরকারপ্রধানের দুর্নীতির বিচার করতে অপরাধটা কোথায়, আমি তো বুঝতে পারছি না।
আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এ মন্তব্য করেন। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ এ স্মরণ সভার আয়োজন করে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, মাথায় পচন ধরলে নাকি সব পচে যায়। মাথায় যদি দুর্নীতি থাকে তাহলে সারা দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত হবে না কেন? যারা দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করতে চায় বা করেছিল, যারা ক্ষমতায় থাকাকালীন পাঁচ বছরে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল তাঁরা এখন আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত। এদের সাংগঠনিকভাবে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে হবে।
আমির হোসেন আমু আরও বলেন, আজ অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। দু-দুবার ক্ষমতায় থাকলে ষড়যন্ত্র তিরোহিত হয় না। বরং বেড়ে যায়। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার ষড়যন্ত্র হয়েছে। তারা চায় না শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিচিত লাভ করুক। এ জন্য আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে শেখ হাসিনাকে হত্যার। এরা দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। তাই আবার দেশের ওপর, শেখ হাসিনার ওপর আঘাতের চেষ্টা চলছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, জাতীয় স্বার্থের বেলায় আমরা একে অপরের ক্ষতি করব—এ মনোবৃত্তি পরিহার করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, শেখ হাসিনার স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। যাকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হোক তাঁর জন্য কাজ করতে হবে।
আমু বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী সম্পর্কে বলতে গেলে অনেকে অসন্তুষ্ট হবেন। তাঁকে যারা ভুল বুঝেছে তাঁর তিরোধানের পর সেই ভুল ভেঙে গেছে। আসলে দাঁত থাকতে অনেকে দাঁতের মর্যাদা যারা অনুধাবন করেনি, মহিউদ্দিন চৌধুরীর তিরোধানে সেটা আজ প্রমাণিত। তিনি চট্টগ্রামেরই একক নেতা। চট্টলবাসীর প্রাণের নেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি কাউকে গাড়ি-বাড়ি করে দেননি। তিনি মানুষের পাশে ছিলেন এবং মানুষকে ভালো বেসে ছিলেন বলে জননেতায় পরিণত হন। মেয়র থাকাকালীন তিনি ভোর পাঁচটায় রাস্তায় বেরিয়ে ঘুরে দেখতেন। কোথায় ময়লা থাকলে তা পরিষ্কারের জন্য তদারক করতেন।
হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার বিকল্প নেই
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী তৃণমূল পর্যায় থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে মহিরুহে পরিণত হন। তিনি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন। নগরের নেতা হয়েও তিনি নগর, উত্তর ও দক্ষিণ-তিনটি সাংগঠনিক জেলার অভিভাবক ছিলেন। সংগঠনের প্রতি দরদ ছিল বলে দুঃসময়ে তিনি ঝুঁকি নিয়েছিলেন। এটা সবার জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
আগামী নির্বাচনকে অগ্নিপরীক্ষা অভিহিত করে মেয়র নাছির উদ্দীন বলেন, বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। চট্টগ্রামের সব আসনে জিততে হবে। শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার বিকল্প নেই।
পদ পেলে কেউ নেতা হয় না
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী তরুণদের উদ্দেশে বলেন, পূর্ববর্তী নেতারা যেভাবে জীবন বিলিয়ে দিয়ে গেছেন আমাদের সবাইকে সেই পথ অনুসরণ করতে হবে। আর নেতা হতে পদের প্রয়োজন নেই। পদ পেলে কেউ নেতা হয়ে যায় না। জ্ঞান-বিজ্ঞান অনুশীলন না করলে যে সমাজের স্বপ্ন আমরা দেখি তা বাস্তবায়ন হবে না।