ভালোবাসা দিবসে নেতার কুপন-বাণিজ্য

প্রতীকী ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় অবৈধভাবে কুপন ছাপিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাংশের এক নেতার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মাধবপুর বাজারে কুপনের ‘ড্র’ অনুষ্ঠিত হয়।
ওই নেতার নাম মো. মামুন (২৫)। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাংশের কমিটির সহসভাপতি। তবে ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ কমিটির অনুমোদন নেই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাঁচ দিন ধরে মাইকিং করে কুপন বিক্রি করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে তিন হাজার কুপন বিক্রি করা হয়েছে। যাঁরা কুপন কিনতে চাননি, তাঁদের কাছেও জোর করে বিক্রি করা হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বগা-মাধবপুর সড়কে মাইকিং করে কুপন বিক্রি করতে দেখা যায়। এ সময় মাইকিংয়ের দায়িত্বে থাকা তরুণ বলেন, ‘মামুন ভাইয়ের নির্দেশে ২০ টাকা করে কুপন বিক্রি করছি।’
কুপনে প্রথম পুরস্কার একটি এলইডি টিভি, দ্বিতীয় পুরস্কার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, তৃতীয় পুরস্কার রাইস কুকারসহ ১০টি পুরস্কারের কথা উল্লেখ রয়েছে। এতে আরও লেখা রয়েছে—বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে এই প্রথম মাধবপুর বাজারে লাকি কুপন ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, তাঁকে জোর করে পাঁচটি কুপন ধরিয়ে দিয়ে এক শ টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন মাধবপুর বাজারের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও। তিনি বলেন, তাঁকেও দুটি কুপন কিনতে বাধ্য করা হয়েছে। ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেননি।
জানতে চাইলে মো. মামুন জোর করে কুপন বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে কুপন ছাপিয়েছি। প্রতিটি কুপন ২০ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে।’ উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না এবং কী পরিমাণ কুপন ছাপানো ও বিক্রি করা হয়েছে—এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রাহাত বলেন, ‘মামুন নামে আদাবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগে তাঁদের কোনো নেতা নেই।’
তবে উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির বলেন, মামুন তাঁদের কমিটির লোক হলেও সম্প্রতি তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, কাউকে কুপন ছাপিয়ে বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।