হায়রে নিয়তি!

মহাসড়কের ওপর অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন তিনি। শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত ঝরছিল। এ অবস্থায় কয়েকজন পথচারী তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে রেখে চলে যান। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যাওয়ার পর তাঁর স্থান হয় লাশ ঘরে। এরপর ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাভার পৌর এলাকার নামাবাজরের ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাভার থানা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ওপর একজন পুরুষ লোক অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। কিছু লোক গোল হয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন। সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি দেখে তিনি তাঁকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে দেন।

যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, শহীদুলসহ কয়েকজন ব্যক্তি বুধবার রাতে অজ্ঞাত পরিচয় লোকটিকে ভর্তি করে রেখে যান। তাঁর হাত-পা ভাঙা ছিল। পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ছাড়া তাঁর পেটের ভেতরেও বড় ধরনের আঘাত ছিল। কর্মকর্তারা বলেন, ওই ব্যক্তিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ভোর পাঁচটার দিকে মারা যান। মারা যাওয়ার পর তাঁর স্বজনদের না পেয়ে লাশটি হাসপাতালের লাশঘরে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত লাশটি ওই ঘরেই ছিল। থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে যোগাযোগ করা হলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। হাসপাতাল থেকেও তাঁকে কিছু জানানো হয়নি।
পরে এই প্রতিবেদক বিষয়টি এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সাংসদ এনামুর রহমানকে জানালে হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে থানাকে অবহিত করা হয়। সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল বাশার বলেন, হাসপাতাল থেকে লোকটির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সাতটার পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লোকটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাঁর মৃত্যুর কারণ দুর্ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।