যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫

ঈশ্বরগঞ্জে যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় এক পক্ষের মহড়া। ছবি: প্রথম আলো
ঈশ্বরগঞ্জে যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় এক পক্ষের মহড়া। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের বিলুপ্ত কমিটি ও নবগঠিত কমিটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পথচারীসহ অন্তত ২৫ জন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

স্থানীয় লোকজন ও দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা যুবলীগের নবগঠিত কমিটির নেতাদের সংবর্ধনা দিতে গত ২৮ জানুয়ারি শহরের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধের সামনে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। কিন্তু নবগঠিত কমিটিকে মেনে নিতে না পেরে যুবলীগের বিলুপ্ত কমিটির সমর্থকেরা ওই সমাবেশ মঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ নিয়ে সপ্তাহজুড়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। ওই ঘটনার ১৮ দিন পর নতুন কমিটির মিছিল আয়োজন করার খবরে আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনটির বিলুপ্ত কমিটির নেতা-কর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র ও হেলমেট মাথায় রণসাজে সজ্জিত হয়ে মুখোমুখি হয়। এ সময় শহরে কেনাকাটার জন্য আসা লোকজন ও পথচারীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন। ব্যবসায়ীরা ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। পরে আগে থেকে প্রস্তুত পুলিশের দল কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে দুই পক্ষকে পৃথক স্থানে আটকে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সংঘর্ষ শুরু হলে একপর্যায়ে পুলিশ পাশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মুখে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরের ওপর দিয়ে যাওয়া ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ কারণে ওই মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ঘটনার পর ময়মনসিংহ থেকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ এসে বিকেল পাঁচটায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এস এ নেওয়াজের নেতৃত্বে পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য শহরের মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে অবস্থান করছিল।
এদিকে যুবলীগের নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সালাম অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা তাঁর বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। অন্যদিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসানের সরকারি বাসায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই বাসায় রাখা আট-দশটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে নবগঠিত যুবলীগের আহ্বায়ক মো. আবুল খায়ের বলেন, ‘আমরা বিএনপি নেত্রীর সব দুর্নীতির বিচারের দাবি জানিয়ে শহরে মিছিল বের করি। ওই মিছিলে বিলুপ্ত যুবলীগের নেতারা হামলা করেন। পরে আমাদের প্রতিরোধের মুখে তাঁরা পালিয়ে যান।’

অন্যদিকে বিলুপ্ত যুবলীগ কমিটির আহ্বায়ক মো. মতিউর রহমান যুবলীগের নবগঠিত কমিটির নেতাদের বিএনপি-জামায়াতের অনুসারী বলে আখ্যা দেন। তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীরা নবগঠিত কমিটিকে সব সময় প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম খান বলেন, ১২টি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।