আহত মেছোবাঘটিকে ছেড়ে দেওয়া হলো

কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় মেছোবাঘটিকে। ছবি: সংগৃহীত
কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় মেছোবাঘটিকে। ছবি: সংগৃহীত

প্রশাসনের কেউ সাড়া না দেওয়ায় আটক মেছোবাঘটিকে আহত অবস্থাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে যোগাযোগ করার পরও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। ঘটনাস্থলেও আসেননি। ফলে এক দিন আটকে রেখে আহত মেছোবাঘটিকে যেখান থেকে ধরা হয়েছে, সেখানেই ছেড়ে দিয়েছে এলাকাবাসী। কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার দুর্গাপুর গ্রামে আজ শনিবার দুপুরে মেছোবাঘটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গতকাল শুক্রবার দুপুরে দুর্গাপুর গ্রামে স্থানীয় মজিবর রহমানের বসতবাড়ির পেছনে গোয়ালঘরে মেছোবাঘটি প্রবেশ করে। তারপর লোকজন ঘেরাও দিয়ে মেছোবাঘটি ধরে ফেলে। সেটিকে প্রথমে কোমরে দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। রাতে লোহার একটি ছোট খাঁচায় চাপাচাপি করে ঢুকিয়ে রাখা হয়।

পরে মেছোবাঘটিকে খাঁচায় রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত
পরে মেছোবাঘটিকে খাঁচায় রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত

খবর পেয়ে আজ সকালে সেখানে ছুটে যান কুষ্টিয়া শহরের বাসিন্দা শাহাবুদ্দীন মিলন। তিনি এলাকায় বন্য প্রাণী নিয়ে কাজ করেন। কোথাও কোনো বন্য প্রাণী আহত হলে তিনি উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, খাঁচার ভেতর ছটফট করছে আহত মেছোবাঘ। সেটিকে ঘিরে রয়েছে এলাকার উৎসুক লোকজন। কেউ সেটিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছে না।

মুঠোফোনে মজিবর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘মেছোবাঘটিকে নিয়ে বিপদে আছি। রাতে এটিকে লোহার খাঁচায় রাখা হয়। এখনো খাঁচাতেই আছে। একবার ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবি। পরে এক বন কর্মকর্তা ফোনে বলেন, ইউএনও এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সামনে তাঁরা এসে ছেড়ে দেবেন। এক দিন হয়ে গেল। কেউ আসেনি। কী করব বুঝতে পারছি না।’

শাহাবুদ্দীন মিলন বলেন, ছোট খাঁচায় থাকার কারণে মেছোবাঘের দুটি থাবায় আঘাত লেগেছে। তাতে রক্ত ঝরছে। এভাবে থাকলে না খেয়ে বাঘটি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। কিন্তু একে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে কেউ কোনো সহযোগিতা করছে না।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বন কর্মকর্তাকে খুঁজে পাচ্ছি না।’

খাঁচা থেকে বের করে দেওয়ার পর চলে যাচ্ছে মেছোবাঘটি। ছবি: সংগৃহীত
খাঁচা থেকে বের করে দেওয়ার পর চলে যাচ্ছে মেছোবাঘটি। ছবি: সংগৃহীত

পরে মজিবর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, প্রশাসনের কাউকে খুঁজে না পেয়ে মেছোবাঘটিকে যেখান থেকে ধরা হয়েছে, সেখানেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

মজিবর রহমানের প্রতিবেশী হাবিব চৌহান আজ বেলা সোয়া একটার দিকে বলেন, মেছোবাঘটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।