পেশাদার খুনিকে খালি হাতে ধরলেন মাছ ব্যবসায়ী

দিনদুপুরে মাছের আড়তে একজনকে গুলি করে মেরে পালাচ্ছিলেন খুনি। এক মাছ ব্যবসায়ী খালি হাতে ধাওয়া করে অস্ত্রসহ তাঁকে ধরে ফেলেন। পরে জানা যায়, ধরা পড়া নুরুল ইসলাম পুলিশের তালিকায় ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’। গত নভেম্বরে বনানীতে এক জনশক্তি রপ্তানিকারক খুনেও জড়িত ছিলেন তিনি। এ ঘটনা গতকাল শনিবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডার।

 নুরুল ইসলামের গুলিতে খুন হওয়া আবুল বাশার ওরফে বাদশা বাড্ডার আনন্দনগর এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। পুলিশ বলছে, দুজন একই দলের সন্ত্রাসী। মাদকের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আবুল বাশারকে খুন করা হয়।

 অস্ত্রসহ খুনিকে ধরা মাছ ব্যবসায়ীর নাম কলিম সরদার। মেরুল বাড্ডা মাছবাজারের পুরোনা ব্যবসায়ী তিনি। এ ঘটনার পর তিনি রীতিমতো নায়ক বনে গেছেন। জড়ো হওয়া লোকজনের কাছে বারবার ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দুপুরে নুরুল ইসলাম, আবুল বাশারসহ চার যুবক মাছের আড়তে ঢোকেন। তাঁরা আড়তের ভেতরে একটি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খান। এরপর চারজন মিলে আড়তের পেছনের দিকে গিয়ে কথা বলতে থাকেন। হঠাৎ গুলি গুলি বলে একজন চিৎকার করে ওঠেন। কলিম বলেন, এক যুবককে দৌড়ে চলে যেতে দেখে তিনি হাত ধরে ফেলেন। ওই যুবক তখন ‘ভাই আমাকে ধরে ফেলছে’ বলে চিৎকার দিলে নুরুল ইসলাম তাঁর দিকে অস্ত্র তাক করে বলেন, ‘ছেড়ে না দিলে গুলি করব।’ তিনি ওই যুবককে ছেড়ে দিয়ে নুরুল ইসলামের পিছু নেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে নুরুল ফাঁকা গুলি করেন। পরে আরেকটি গুলি করতে গেলে সেই গুলি আর বের হয়নি। এরপর দৌড় দেন। তিনিও পিছু পিছু দৌড় দেন। রামপুরা ব্রিজের ওপর গিয়ে নিচের একটি ফাঁকা জায়গায় লাফ দেন নুরুল ইসলাম। তিনিও লাফ দিয়ে পড়ে তাঁকে ধরে ফেলেন। ততক্ষণে লোকজন জড়ো হয়ে গেছেন। সবাই তাঁকে ধরে পিটুনি দেন। এরপর পুলিশ আসে।

গুলিবিদ্ধ আবুল বাশারকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া আরেক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, শৌচাগারের সামনে গিয়ে তিনি আবুল বাশারকে রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে দেখেন। বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, নুরুল ইসলামের কাছে পাওয়া রিভলবারের চেম্বারে ছয়টি গুলির মধ্যে একটি গুলি অবশিষ্ট ছিল। হয়তো সেই গুলিটি ভেতরে আটকে যায়। তাঁকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর) অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহজাহান বলেন, নুরুল ইসলাম ও আবুল বাশার দুজনই একই দলের। তাঁরা পেশাদার খুনি। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বাশারকে হত্যা করেছেন নুরুল ইসলাম।