সড়কে দিনে ৯ জন প্রাণ হারাচ্ছে

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। সম্প্রতি ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গোমতী সেতুতে।  ফাইল ছবি
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। সম্প্রতি ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গোমতী সেতুতে। ফাইল ছবি
>
  • এক বছর ধরে প্রথম আলো দেশের বিভিন্ন স্থানের সড়ক দুর্ঘটনায় তথ্য রাখছে।
  • গত ৩৬৫ দিনে মারা গেছেন ৩ হাজার ৭৯ জন।
  • বেসরকারি হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এক বছর ধরে প্রথম আলো সারা দেশের বিভিন্ন স্থানের সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের তথ্য রাখছে।

অবশ্য বেসরকারি হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ২০১৭ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৩৯৭ জন। অর্থাৎ দিনে ২০ জন। এর বাইরে নিরাপদ সড়ক চাই—নিসচার হিসাবে গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫ হাজার ৬৪৫ জন। দিনে ১৫ জন। সরকারি হিসাব রাখে বাংলাদেশ পুলিশ। সংস্থাটি গত বছরের হিসাব এখনো প্রকাশ করেনি। তবে আগের কয়েক বছরের হিসাব বলছে, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দুই থেকে আড়াই হাজারের মধ্যে।

গতকালও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। এ ছাড়া এই জেলার ফটিকছড়ি, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও কক্সবাজারের মহেশখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশুসহ আরও তিনজনের প্রাণ গেছে। গতকাল সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাণহানির সংখ্যা নিয়ে একেকজনের হিসাব একেক রকম। সরকারের দায়িত্ব একটা সঠিক তথ্যভান্ডার তৈরি করা। কারণ, জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি অর্ধেকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু সঠিক তথ্যভান্ডার না থাকলে সেটা হয়েছে কি না, বা কীভাবে করা যাবে তা অস্পষ্ট থেকে যাবে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় প্রাণ যাওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই কর্মক্ষম। দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশের সমান। তাই এতে গুরুত্ব না দেওয়ার কোনো সুযোগই নেই।

গতকাল নিহত ৭

গতকাল সকালে রাজধানীর বাড্ডার ফুজি টাওয়ার এলাকায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় রিজিয়া বেগমের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। তিনি ছেলের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। গতকাল গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

বাড্ডার সাঁতারকুল এলাকায় অটোরিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হন খালাতুন নেসা (৭০)। বাসার সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি অটোরিকশা তাঁকে ধাক্কা দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মিঠাছড়া বাজার বাইপাসে বিকেলে শাহ আলম (৩৫) নামে এক পথচারী সড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগতিতে আসা মোটরসাইকেলের সামনে পড়েন। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। মোটরসাইকেলের দুই আরোহী জাহেদুল ইসলাম (২৪) ও মশিউর রহমান (২৩) নিহত হন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের নাটাপাড়ায় সকালে ট্রাকের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে জেসমিন আক্তার (২৭) নিহত হয়েছেন।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট মেডিকেল রাস্তার মাথা এলাকায় সকালে ট্রাকচাপায় মুহাম্মদ নুরুল আবছার (৪৫) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। কক্সবাজারের মহেশখালীর তিতামাঝিরপাড়ায় সকালে অটোরিকশার ধাক্কায় মোহাম্মদ শাওয়াল (৭) নিহত হয়।