দল বিচ্ছিন্ন ও 'এমপি লীগ'

টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জেলার সাংসদদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে বলেছেন, সাংসদেরা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। আওয়ামী লীগের ভেতর তাঁরা ‘এমপি লীগ’ তৈরি করছেন।

গতকাল শনিবার টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে এসব অভিযোগ ও ক্ষোভের কথা উঠে আসে। সভায় জেলার আট সাংসদের মধ্যে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের হাসান ইমাম খান ও টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের অনুপম শাহজাহান উপস্থিত থাকলেও তাঁদের বক্তৃতার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান। সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় দলের জেলা শাখার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবু মোহাম্মদ এনায়াতে করিম, সহসভাপতি শামছুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র সাহা, সদস্য খন্দকার হাফিজ, মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান, কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হালিমুজ্জামান তালুকদার, নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক, বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী অলিদ ইসলাম, ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদ আহমেদ, ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মাসুদুল হক, ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার তাঁর এলাকার সাংসদ হাসান ইমাম খান সম্পর্কে বলেন, দল থেকে নির্বাচিত হলেও দলের সঙ্গে এখন সাংসদের সম্পর্ক নেই। তিনি উপদল গঠন করেছেন। সম্প্রতি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের যুবলীগের কমিটিতে স্থান দিয়েছেন।

দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক সাংসদ আবদুল বাতেন সম্পর্কে বলেন, সাংসদ তাঁর নিজের মতো করে নিজের লোক নিয়ে চলেন। দলের কারও সঙ্গে যোগাযোগ নেই।

গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হালিমুজ্জামান তালুকদার বলেন, তাঁর এলাকার সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামানের পুত্রসহ পাঁচজন মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের লোক বানানোর জন্য ব্যস্ত। দলের সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগাযোগ নেই।

মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম খান বলেন, দলের যেকোনো ত্যাগী নেতার মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কেউ মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেই সাংসদেরা ক্ষুব্ধ হন।

 পরে যোগাযোগ করা হলে সাংসদ হাসান ইমাম খান বলেন, সভায় সাংসদদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা ঠিক নয়। বক্তাদের অনেকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী, তাই তাঁরা এভাবে বলেছেন। তিনি এসব বক্তব্যের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

অনুপম শাহজাহান এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মুঠোফোন বন্ধ থাকায় সাংসদ আবদুল বাতেনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।