আর হাত পাততে হবে না ইমামকে

>

• কাভার্ড ভ্যানচালক ইমাম সড়ক দুর্ঘটনায় একটি হাত হারানোর পর রিকশাচালক হন।
• গত নভেম্বরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সেটিও খুইয়েছিলেন তিনি।

নতুন অটোরিকশায় ছেলেসহ ইমাম হোসেন। ছবি: প্রথম আলো
নতুন অটোরিকশায় ছেলেসহ ইমাম হোসেন। ছবি: প্রথম আলো

সংসার চালানোর জন্য এখন আর অন্যের কাছে হাত পাততে হবে না ইমাম হোসেনকে (৩৪)। রোজগারের জন্য ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা পেয়েছেন তিনি। সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১-এর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে অটোরিকশাটি কিনে দেওয়া হয়েছে।

একটি কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ড ভ্যানচালক ইমাম সড়ক দুর্ঘটনায় একটি হাত হারানোর পর রিকশাচালক হন। গত নভেম্বরে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সেটিও খুইয়েছিলেন তিনি।

স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে রাজারবাগের বাগপাড়ায় থাকেন ইমাম। তিনি জানান, ২০০৭ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। দুর্ঘটনার পর তাঁর ডান হাত কেটে ফেলতে হয়। এরপর বেশ কিছুদিন তিনি ভাড়ায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালিয়েছেন। গত নভেম্বরে তিনি একটি অটোরিকশার মালিক হয়েছিলেন। এক ব্যক্তি তাঁকে রিকশা ও অন্যজন তা ব্যাটারিচালিত রিকশায় রূপান্তরের জন্য আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু এই রিকশা তিনি দুই সপ্তাহও চালাতে পারেননি।

গত ২৪ নভেম্বর রাতে নয়াপল্টনের জোনাকী সিনেমা হলের পাশ থেকে যাত্রী নিয়ে কাপ্তান বাজার যাওয়ার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন ইমাম। যাত্রী বেশে তাঁর রিকশায় ওঠা অজ্ঞান পার্টির এক সদস্য ও তার এক সহযোগী ইমাম হোসেনকে মারধর করে রিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা হলেও রিকশাটি উদ্ধার হয়নি। ঘটনাটি নিয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর প্রথম আলোতে ‘গাড়ি থেকে রিকশায়, তারপর পথে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি ছাপা হওয়ার পর বেশ কয়েকজন তাঁকে আর্থিক সাহায্য করেন। কিন্তু সেটি নতুন অটোরিকশা কেনার জন্য যথেষ্ট ছিল না। এ সময় এগিয়ে আসেন সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল স ম আখতারুজ্জামান ও র‍্যাব-১।

গতকাল আখতারুজ্জামান ও র‍্যাব-১-এর একজন প্রতিনিধি কমলাপুরে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম মার্কেটে যান। তাঁরা মার্কেটের ইসলামিয়া মোটরস থেকে ইমাম হোসেনকে দেড় লাখ টাকায় একটি ব্যাটারিচালিত নতুন অটোরিকশা কিনে দেন।

নয়া অটোরিকশা পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইমাম। তিনি বলেন, ‘এই অটোরিকশা দিয়ে দিনে কয়েকটি ট্রিপ দিতে পারলে আমার সংসার চলে যাবে।’