আসাম-দার্জিলিংয়ের চা মিলিয়ে খাওয়া পছন্দ প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশ চা প্রদর্শনী ২০১৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
বাংলাদেশ চা প্রদর্শনী ২০১৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা

আসামের সঙ্গে দার্জিলিং চা মিলিয়ে খেতে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার সকালে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ চা প্রদর্শনী ২০১৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেওয়ার সময় নিজের এই পছন্দের কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী মাটির রকমভেদে চায়ের স্বাদ ভিন্ন হয় উল্লেখ করে বলেন, এক জায়গার চায়ের সঙ্গে আরেক জায়গার চা ব্লেন্ড করেও খাওয়া হয়। খুব কড়া চায়ের জন্য আসাম টি এবং সুগন্ধি চা হচ্ছে দার্জিলিং টি। শ্রীলঙ্কায় হয় মসলা চা, সর্দি-কাশিতে এটি খুবই ভালো শরীরের জন্য। আর ব্যক্তিগতভাবে আসামের সঙ্গে দার্জিলিং চা মিলিয়ে খেতে পছন্দের কথা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চায়ের বহুমুখী ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, সরকার চায় বাংলাদেশের চা গুণগত মানে উন্নত হয়ে সারা বিশ্বে নিজের স্থান করে নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের চা সারা বিশ্বে নিজের স্থান করে নিক। আরও উন্নত হোক এবং চা গবেষণা ইনস্টিটিউট চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্যও গবেষণা আরও জোরদার করবে।’

বিভিন্ন ফ্লেভারযুক্ত চা ছাড়াও চা থেকে বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী, যথা টি সোপ, টি শ্যাম্পু, টি টুথপেস্ট প্রভৃতি এবং খাদ্যসামগ্রী যেমন টি কোলা, চায়ের আচার প্রভৃতি উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চা উৎপাদনের জন্য যে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি আমরা নিচ্ছি, তা ছাড়াও যে চা গাছটা থেকে যাচ্ছে, তা বহুমুখীকরণে আমাদের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

বাংলাদেশ চা বোর্ড চা ও চা-জাত পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে মূল্য সংযোজিত বিভিন্ন ধরনের চা উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। সাতকড়া চা, লেমন চা, মসলা চা, জিনজার চা, তুলসী চা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

চা-পাতার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা
চা-পাতার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ফোকাস বাংলা

সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) যৌথভাবে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। দেশ-বিদেশের চা-প্রেমীদের কাছে চায়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে এই প্রদর্শনীতে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বোস এবং চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের চেয়ারম্যান আর্দাশিল কবির অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন। বিটিবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। দেশের চা-শিল্পের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।

শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থল থেকে মতিঝিলে ৩০তলা বিশিষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু চা ভবন’-এর নির্মাণকাজের ফলক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে চায়ের নতুন জাত ‘বিডি ক্লোন-২১’ অবমুক্ত করেন এবং সাতটি ক্যাটাগরিতে চা উৎপাদন ও বিপণনব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়।