ওবায়দুল কাদেরের কথায় মনে হয় বিএনপির নীতিনির্ধারক

রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

*ইসি প্রধানমন্ত্রীর মনোবাসনা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে
*খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব কখনো কখনো এমনভাবে কথা বলেন, যেন তিনি একদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আবার অন্যদিকে বিএনপিরও নীতিনির্ধারক। আমি জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বিএনপির অবিচ্ছেদ্য অংশ, তিনিই বিএনপির নেতা-কর্মীদের একমাত্র প্রেরণা।’

খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলেও বিএনপি নির্বাচনে যাবেই—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ মন্তব্য করেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিতে হামলারও প্রতিবাদ জানান রিজভী।

রহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন এ দেশে হবে না। মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে, হাত-পা বেঁধে কোনো চক্রান্তের নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমন উদ্ভট, অবাস্তব ও বানোয়াট কথা বলেন, তাতে তিনি যে মানুষের কাছে হাসির পাত্র হচ্ছেন, সেদিকে তিনি খেয়াল করছেন না। সড়ক-মহাসড়কের বেহাল অবস্থার মতোই তাঁর বক্তব্য বেসামাল।’ তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব কখনো কখনো এমনভাবে কথা বলেন, তিনি যেন একদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আবার অন্যদিকে বিএনপিরও নীতিনির্ধারক। আমি জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বিএনপির অবিচ্ছেদ্য অংশ, তিনিই বিএনপির নেতা-কর্মীদের একমাত্র প্রেরণা।’

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দুই নেতার বক্তব্যে এটি পরিষ্কার, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখেই আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের চক্রান্ত করছে সরকার। সরকার প্রশ্নফাঁসে কূলকিনারা করতে পারে না, কিন্তু ভুয়া মামলার জন্য জাল নথি আলোর গতিতে বানিয়ে ফেলে।

খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের কপি নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, কামরুল সাহেব বলেছেন রায়ে পেতে দেরির দায় বিএনপির। তিনি তো বলবেনই। কারণ পচা গম আমদানি ও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আওয়ামী নেতা-কর্মীদের অবৈধভাবে চাল আমদানির সুযোগ দিয়ে চালের মূল্য বাড়িয়ে খাদ্যমন্ত্রী বেসামাল হয়ে গেছেন। এখন তিনি আওয়ামী সরকারের বেসুরো ভাঙা ঢোলের মতো কথা বলে যাচ্ছেন।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী। তাঁর কথার তো প্রতিফলন থাকতে হবে? তাঁরা কি ভাবছেন, দেশের মানুষ গণ্ডমূর্খ?

ইসি প্রধানমন্ত্রীর মনোবাসনা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে
আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে রিজভী বলেন, জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সব দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। গত দুদিন আগেও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলেছে, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সব ক্ষমতার অধিকারী হলেও কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মনোবাসনা পূরণের জন্যই কাজ করে যাচ্ছে।