২১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটিতেও শহীদ মিনার নেই

বগুড়ার কাহালু উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও কোনোটিতেই শহীদ মিনার নেই। শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্যপুস্তকে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস নিয়ে বিভিন্ন প্রবন্ধ পড়লেও বাস্তবে তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়া জাতীয় এ দিবসটিতে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্গাপুর ইউনিয়নে ১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩টি উচ্চবিদ্যালয়, ৪টি মাদ্রাসা ও ১টি কলেজ আছে। কিন্তু গোটা ইউনিয়নের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। কোনো প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিয়েও শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা করতে পারেনি। ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বাস। শিক্ষার্থী আছে প্রায় পাঁচ হাজার। শিক্ষার হার শতকরা ৬৮ ভাগ।

ইউনিয়নের আল্লা মেরতাকিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূরন্নবী প্রামাণিক বলে, ‘প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলার ক্লাসে কয়েকবার একুশের ওপর পড়েছি। কিন্তু বাস্তবে কোনো দিন শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিতে পারিনি। এর আগে কয়েকজন শিক্ষার্থী বাঁশের শহীদ মিনার বানিয়ে ফুল দিয়েছি। কিন্তু এভাবে কত দিন চলবে।’ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির বাংলা পড়ান আবদুর রাজ্জাক। এই শিক্ষক বলেন, একুশ ফেব্রুয়ারি এলেই শহীদ মিনার নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাব দেওয়া যায় না।

ইউনিয়নের আরেকটি বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বামুজা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান বলেন, ‘গোটা ইউনিয়নে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই ভাবতেই লজ্জায় পড়তে হয়। আমি নতুন যোগদান করেছি। আমাদের মাদ্রাসায় আয়ের তেমন খাত নেই। তারপরও প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করব।’

উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজিবুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার জন্য ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ছিল প্রথম আলোকবর্তিকা। শহীদ মিনার নির্মাণে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিলে এত দিনে নির্মাণ করা হতো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান বলেন, এবার উপজেলা পরিষদ থেকে ওই ইউনিয়নের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।