সিআরবির জোড়া খুনে যুবলীগের এক কর্মী

>• পিবিআইয়ের তদন্তের তথ্য
• ৬৪ জনকে আসামি করে চট্টগ্রাম আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হতে পারে

যুবলীগের এক কর্মীর গুলিতেই সাড়ে চার বছর আগে চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় শিশুসহ দুজন খুন হন। এ ঘটনায় করা মামলায় পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। পিস্তল থেকে গুলি ছোড়া যুবলীগের ওই কর্মীর নাম অজিত বিশ্বাস। তবে পিস্তলটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি। 

রেলওয়ের কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জুন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর এবং ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম ওরফে লিমনের অনুসারী নেতা-কর্মীদের মধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবি (রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর) এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিতে প্রাণ হারান যুবলীগের কর্মী সাজু পালিত (২৮) এবং শিশু মো. আরমান (৮)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে অজিত বিশ্বাস পূর্বশত্রুতার কারণে সাজু পালিতকে গুলি করেন। এ সময় লিমনের অনুসারীরা বাবরের অনুসারীদের দিকে এগিয়ে এলে অজিত আবার গুলি ছোড়েন। সেই গুলিতে শিশু আরমান নিহত হয়। তিনি বলেন, বাবর, লিমন, অজিতসহ ৬৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (আজ) অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।
আদালত সূত্র জানায়, তদন্তে গুলি করার অভিযোগ ওঠা যুবলীগের কর্মী অজিত এই মামলায় কখনো কারাগারে যাননি। ঘটনার পর তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। পরে মামলার ধার্য দিনে নিয়মিত হাজিরা না দেওয়ায় এক বছর আগে নিম্ন আদালত তাঁর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত রোববার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অজিত প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের দিন তিনি সিআরবি এলাকায় ছিলেন। তবে কাউকে গুলি করেননি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি রেলে ঠিকাদারি করেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে যুবলীগ নেতা বাবর তাঁর বড় ভাই।
সাজু পালিতের বড় ভাই উৎপল পালিত বলেন, সেদিন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সময় অজিত বিশ্বাসই তাঁর ভাইকে গুলি করেছে। প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। পরোয়ানা থাকলেও অজিত প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করেন। অথচ পুলিশ তাঁকে ধরছে না।
নিহত শিশু আরমানের মা আছিয়া বেগম মানুষের বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। পরিবার নিয়ে সিআরবি এলাকার একটি কলোনিতে থাকেন। ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান তিনি।
বাবর চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী এবং লিমন চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।