ফেসবুকে ছাত্রীর ভিডিও, অভিযোগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
>
  • প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছাত্রী ধর্ষণ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার।
  • আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি।
  • ছাত্রীর স্বামীর হাতে আপত্তিকর ভিডিও তুলে দেন।

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এক কলেজছাত্রীর কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাঁকে ধর্ষণ এবং এসব ছবি ও ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। লজ্জা-অপমানে ওই ছাত্রী কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

জাজিরায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আশ্রাফুল ইসলাম ওরফে মিঠুন মাদবরের বিরুদ্ধে। তাঁর বাড়ি জয়নগর ইউনিয়নের একটি গ্রামে।

শরীয়তপুরে এর আগে গত অক্টোবরে ছয় নারীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ফেসবুকে। এ অভিযোগে ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

কলেজছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই বছর আগে ধর্ষণ করেন মিঠুন। তখন কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন তিনি। তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ছাত্রীকে পুনরায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে চাপ দেন। দেন ধর্ষণের হুমকিও। পরে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় একটি কলেজে ভর্তি হয় ওই ছাত্রী। কিন্তু সেখানে গিয়েও মিঠুন তাঁকে বিরক্ত করতে থাকেন।

পরিবার আরও বলেছে, কলেজছাত্রীকে জাজিরার পাশের উপজেলার একটি গ্রামের এক ছেলের সঙ্গে গত ২৫ নভেম্বর বিয়ে দেওয়া হয়। ২৭ নভেম্বর স্বামী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। তখন মিঠুন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তাঁর হাতে তুলে দেন। এখন এই সংসার ভাঙার উপক্রম।

এলাকাবাসী জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘জয়নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ’ নামে ফেসবুকের একটি আইডি থেকে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর ছবি ও একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। এরপর গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও অর্ধশত আইডি থেকে তা ছড়ানো হয়।

জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বিপুল কাজী প্রথম আলোকে বলেন, জয়নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রবাসে। কারা ছাত্রলীগের নামে এমন একটি ফেসবুক আইডি চালায়, তা তাঁর জানা নেই।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম সরকার বলেন, মিঠুনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়ার পর গত রোববার তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত সোমবার বিকেলে মিঠুনের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা বলেন, পাঁচ-ছয় দিন ধরে তিনি এলাকায় নেই। তাঁর বাবা বলেন, ‘অনেকবার ওকে বুঝিয়েছি এ পথ ত্যাগ করতে। তবে সে আমাদের বাধ্য নয়।’

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, ‘খবরটি লোকমুখে শুনেছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’