বকেয়া বেতন-ভাতা আদায়ে আন্দোলনে নতুন কৌশল

• নগরবাসীর সমর্থন পেতে কৌশল।
• কর্মচারী-কর্মকর্তারা এক বেলা কর্মবিরতি ও অন্য বেলা কাজ করছেন।
• কর্মচারীদের পাঁচ মাসের বেতন বাকি পড়েছে।
• দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীদের চার মাসের বেতন বাকি।
• ১৭ মাস ধরে তাঁরা ভবিষ্য-তহবিলের বরাদ্দ পাচ্ছেন না।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবির আন্দোলনে নতুন কৌশল নিয়েছেন। নগরবাসীর সমর্থন পেতে তাঁরা এক বেলা কর্মবিরতি ও অন্য বেলা কাজ শুরু করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

আন্দোলনকারীরা বলেন, কর্মচারীদের পাঁচ মাস ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীদের চার মাসের বেতন বাকি পড়েছে। ১৭ মাস ধরে তাঁরা ভবিষ্য-তহবিলের বরাদ্দও পাচ্ছেন না। বকেয়া আদায়ের জন্য এর আগে তাঁরা ৯ বার আন্দোলনে নেমেছিলেন, তবু কাজ হয়নি। গত রোববার থেকে তাঁরা দশমবারের মতো এই আন্দোলন শুরু করেন। এ দুই দিন তাঁরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। গতকাল তাঁরা এক বেলা কাজ বন্ধ রেখে মেয়রের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। দুপুরের পর থেকে তাঁরা কাজে যোগ দেন।

আন্দোলনরত নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আনিচুজ্জামান বলেন, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা যদি পাঁচ মাস বকেয়া থাকে, তাহলে তাঁদের সংসার চলবে কীভাবে? গত বছর লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলে দুই মাসের বেতন দেওয়া হয়। তখন নগর পরিচ্ছন্নতা বন্ধ রেখে আন্দোলন শুরু করায় নগরবাসী দুর্ভোগে পড়ে। এবার নগরবাসী দুর্ভোগে পড়ে, এমন কর্মসূচি দেওয়া হবে না। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হবে, তত দিন আন্দোলন চলবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের পানি, লাইসেন্স, মোটরযান, কর ও প্রকৌশল বিভাগসহ সাধারণ শাখার টেবিল-চেয়ার ফাঁকা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ কর্মস্থলে নেই। সবাই নগর ভবনের দোতলায় মেয়র কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। বেলা একটার পর কাজে যোগ দেন তাঁরা। তবু পরে কাজ স্বাভাবিক হয়নি।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা বলেন, মেয়র প্রকাশ্য সভায় নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধের ওয়াদা করেছিলেন, কিন্তু তা পূরণ করেননি। তিনি বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়ে পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন বিভাগে বদলি ও চাকরিচ্যুতির হুমকি দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেয়র আহসান হাবিব কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের মধ্যে কাজের লোক কম। আমি দুপুরের পর নগর ভবনের গিয়েছি। তখন আন্দোলনকারীরা নগর ভবনে ছিলেন না। আগের চেয়ে বেতন-ভাতা তিন গুণ বেড়ে যাওয়ায় বকেয়া পড়েছে। তারপরও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করা হবে।’