ভণ্ড পীরের বিরুদ্ধে কিশোরকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

আধ্যাত্মিক ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কিশোরকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই লোক নিজেকে পীর দাবি করে কিশোরকে বাসায় নিয়ে নির্যাতন করে। এ ঘটনায় কথিত পীরের বিরুদ্ধে আজ বুধবার দুপুরে মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা। এদিকে মামলার খবর পেয়ে বাসা থেকে পালিয়েছেন ওই ভণ্ড পীর।

ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌরসভায়। যৌন নির্যাতনের শিকার কিশোর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।

কথিত পীরের নাম আবদুল খালেক ওরফে খালেক পাগলা (৫২)। তাঁর বাড়ি উপজেলার বহেড়াতৈল গ্রামে। সখীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নিজের পাঁচতলা বাড়িতে স্ত্রী ও পুত্রবধূকে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। তাঁর স্ত্রী দাবি করেছেন, আবদুল খালেক একজন মানসিক রোগী।

সখীপুর থানা-পুলিশ ও কিশোরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সখীপুর পৌরসভায় ওই কিশোরের নানাবাড়ি। সেখানে বাউলগানের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ওই কিশোর ১৮ ফেব্রুয়ারি বেড়াতে আসে। অনুষ্ঠানে কিশোরের নানা আবদুল খালেকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। একপর্যায়ে খালেক জানান, তাঁর আধ্যাত্মিক ক্ষমতা রয়েছে। সেই ক্ষমতা দিয়ে তিনি কিশোরকে এ বছর অনুষ্ঠেয় জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাইয়ে দিতে পারবেন। এ ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য কিশোরকে তাঁর সঙ্গে বাড়িতে যেতে বলেন। সেই অনুসারে কিশোর তাঁর সঙ্গে বাড়ি যায়। বাসায় নিয়ে খালেক ওই কিশোরকে প্রথমে একটি যোগ অঙ্ক করতে দেন। পরে নানা কাটাকাটি করে আধ্যাত্মিক ভাব আসার অভিনয় করেন। একপর্যায়ে কক্ষের দরজা বন্ধ করে কিশোরকে যৌন নির্যাতন করেন। আধা ঘণ্টা পর খালেক ওই কিশোরকে নানার বাড়ি পৌঁছে দেন। এ ঘটনা জানিয়ে দিলে জিপিএ-৫ পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে যাবে বলেও হুমকি দেন।

ওই কিশোরের মা জানান, দুই দিন ধরে তাঁর ছেলে ঠিকমতো খাবার খাচ্ছে না। ঘুমাতেও পারছে না। পরে সে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানায়।

সখীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার শিকদার জানান, ‘আবদুল খালেক নিজেকে পীর দাবি করে এর আগেও প্রতারণা করেছেন বলে শুনেছি।’

এ ব্যাপারে আবদুল খালেকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর স্ত্রী জানান, উপজেলার মহানন্দপুর গ্রামে তাঁর মুরগির খামার আছে। সেটি দেখার কথা বলে তাঁর স্বামী আজ সকাল ১০টায় বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন। দুপুরের পর থেকে তাঁরাও ফোন বন্ধ পাচ্ছেন। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই। সে (আবদুল খালেক) পীর না, একজন মানসিক রোগী।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ভুইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়ে কিশোরের মা আজ থানায় মামলা করেছেন। আবদুল খালেককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কাল বৃহস্পতিবার ওই কিশোরের মেডিকেল পরীক্ষা করা হবে।