পীরের বিরুদ্ধে ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

  • পুলিশ ওই ছাত্রকে হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠাবে।
  • পুলিশের গ্রেপ্তারের ভয়ে ওই পীর বাসা থেকে পালিয়ে গেছেন।

২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক পীরের বিরুদ্ধে এক ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার ওই ছাত্রের মা বাদী হয়ে ওই পীরকে (৫২) আসামি করে থানায় যৌন নির্যাতনের (বলাৎকার) অভিযোগে মামলা করেছেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই পীরের বাড়ি উপজেলার বহেড়াতৈল ইউনিয়নে। তিনি তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বউকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা সদরে অন্তত পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছেন। এদিকে পুলিশের গ্রেপ্তারের ভয়ে ওই পীর বাসা থেকে পালিয়ে গেছেন।
সখীপুর থানার পুলিশ ও ওই ছাত্র সূত্রে জানা গেছে, নানার বাড়িতে বাউলগানের অনুষ্ঠান উপলক্ষে সে গত রোববার বেড়াতে আসে। নানা ওই বাউলগানের অনুষ্ঠানে ওই পীরের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। এর সূত্র ধরে ওই দিন রাত নয়টার দিকে তাকে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই পীর তাঁর বাসায় নিয়ে যান। এ সময় ওই পীর তাকে প্রথমে একটি যোগ অঙ্ক করতে দেন। পরে একপর্যায়ে কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালান। নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে আধা ঘণ্টা পর ওই পীর তাকে নানার বাড়ির বাউলগানের অনুষ্ঠানে পৌঁছে দেন।
ওই ছাত্রের মা বলেন, ‘দুই দিন ধরে আমার ছেলে ঠিকমতো খাবার খাচ্ছে না ও ঘুমাতেও পারছে না। পায়ুপথে ব্যথায় পায়খানা করতে না পারায় সে পুরো ঘটনা আমাদের কাছে খুলে বলে। পরে ওই পীরের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিই। আমার ছেলেটি এবার অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।’
সখীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার শিকদার বলেন, ‘ওই পীর নিজেকে একজন আধ্যাত্মিক পীর দাবি করে প্রতারণা করছেন। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের কথা শুনেছি।’
ওই পীরের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে ওই পীরের তাঁর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের মুরগির খামার দেখার কথা বলে তাঁর স্বামী বাসা থেকে সকাল ১০টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন। স্ত্রী দাবি করেন, দুপুরের পর থেকে ফোন বন্ধ থাকায় তাঁরাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে স্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।
আমার স্বামী কোনো পীর নয়, সে মূলত একজন মানসিক রোগী।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ভুইয়া প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। ওই পীরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গতকাল সরকারি বন্ধ থাকায় ওই ছাত্রকে ডাক্তারি
পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো যায়নি। আজ পাঠানো হবে।