এখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জনগণের উল্লেখ নেই: মেনন

রাশেদ খান মেনন
রাশেদ খান মেনন

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এবং জনগণের উদ্যোগ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ সম্ভব হতো না। মুক্তিযুদ্ধ সম্ভব হয়েছে এ দেশের আপামর জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। এখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সেই জনগণের উল্লেখ নেই।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন এ মন্তব্য করেন। ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কর্মসূচি থেকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম সমন্বয় কমিটির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস একেকজন একেকভাবে লিখছে। সেনাবাহিনীর ইতিহাসে জনগণের কোনো স্থানই নেই। ভারতের যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা তো এটাকে পাকিস্তান-ভারতের যুদ্ধ বলে এখনো পর্যন্ত বর্ণনা করে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখছেন, তাঁরা একেকজন একেকভাবে লিখছেন—বিতর্ক করছেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বেরিয়ে আসছে না। কারণ, জনগণকে বাদ দিয়ে এই যুদ্ধ হয় না। সেই জনগণকে যদি বাদ দেওয়া হয়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঠিকভাবে বেরিয়ে আসতে পারে না।

জনগণের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, যাঁরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বলতে অজ্ঞান, তাঁরাও ভুলে যান সেই সময় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ছাত্ররা যখন ভাষার জন্য আন্দোলন করলেন, তখন সেই আন্দোলন আর ছাত্রদের মধ্যে থাকেনি, সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছে।

দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের কথা বলতে গিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, পঞ্চাশের দশকে রাজনীতিতে যে ঐক্য এ দেশে ছিল ক্ষমতার লোভের কারণে সেদিনের সেই ঐক্য বিনষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের মতো একজন অসাম্প্রদায়িক কবিকে এ দেশে মুসলমান কবি বানানো হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের বিষয়ে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, খালেদা জিয়াকে দুই কোটি টাকা দুর্নীতি করার কারণে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় অনেকে ‘আহা-হা’ করছেন। কিন্তু তাঁরা পাকিস্তানের ঘটনা দেখেননি। সেখানে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে দুর্নীতির দায়ে চলে যেতে হলো, দলের প্রধান হিসেবেও পদ হারাতে হলো। তিনি বলেন, এ দেশে জিয়াউর রহমান দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল, এরশাদ দুর্নীতিকে শিল্প বানিয়েছিলেন।

শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক হায়দার আকবর খান রনো। তবে তাঁর পাঠানো বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন হায়দার আনোয়ার খান জুনো, শামসুল হুদা প্রমুখ।