এতিমের টাকা মেরে খাওয়া কোরআনেও নিষেধ আছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এতিমখানা তৈরির জন্য বিদেশ থেকে আসা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন কারাগারে। তিনি প্রশ্ন করেন, এতিমখানার জন্য বিদেশ থেকে টাকা এসেছে, সেই এতিমখানা কই? কী তার ঠিকানা? সেখানে কয়জন এতিম আছে?

আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এতিমের টাকা এতিমের হাতে যায়নি, সেই টাকা লুট করে খেয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলা দিয়েছে। আজকে তার সাজা হয়েছে।

জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, লুট করা, চুরি করা—এটাই বিএনপির চরিত্র। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল বাংলাদেশ তখনই পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছেলেদের অর্থ পাচার ও ঘুষ–দুর্নীতি আমেরিকার ফেডারেল কোর্ট এবং সিঙ্গাপুরের কোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। পাচার করা টাকাও দেশে ফেরত এনেছে এই সরকার। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিসের আন্দোলন, টাকা চুরির জন্য জেল হয়েছে। এতিমের টাকা মেরে খাওয়া পবিত্র কোরআনেও নিষেধ করা আছে। কোরআন শরিফে বলা আছে, এতিমের ভাগ এতিমকে দেওয়ার জন্য, ২৭ বছরেও সেই এতিমের ভাগ এতিমকে দিতে পারেননি। সেই টাকা নিজের কাছে রেখে দেওয়ার শাস্তি তিনি (খালেদা জিয়া) পেয়েছেন। এতিমের টাকা আত্মসাৎকারীরা দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী জিয়া পরিবারের সেই ভাঙা স্যুটকেস ও ছেঁড়া গেঞ্জির মালিকেরাই শত শত কোটি টাকার মালিক। আবার টাকাপয়সা বিদেশেও পাচার করে। আরও কত কিছু তারা করেছে। কোকো-১, কোকো-২ থেকে ৬ পর্যন্ত লঞ্চ, ডান্ডি ডাইং ইন্ডাস্ট্রি, আরও কত রকমের ইন্ডাস্ট্রি তারা করেছে। ব্যাংক থেকে ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত পর্যন্ত দেয়নি। অন্যদিকে সন্ত্রাস, লুটপাট, দুর্নীতি, বাংলা ভাই সৃষ্টি করে মানুষের দিনের শান্তি এবং রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। এ সময় শেখ হাসিনা তাঁদের (তাঁর এবং ছোট বোন শেখ রেহানার) ব্যক্তিগত সম্পত্তি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি দান করে সেখানে একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে বলে জানান। এই ট্রাস্ট থেকে ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীকে লেখাপড়ার জন্য নিয়মিত বৃত্তি দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাজশাহীতে যখন তাঁর দলের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র নির্বাচিত হন, তখনই এই রাজশাহী শহরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়। বিএনপির কোনো মেয়র এমন উন্নয়ন করতে পারেনি। আর এখন রাজশাহী সিটি করপোরেশনে যিনি বিএনপির মেয়র, তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির মামলা। তবুও তিনি পদে ছিলেন এবং তাঁর সরকার এখানে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ বন্ধ করেনি। তিনি বলেন, ‘আমরা উন্নয়নের জন্য প্রকল্প দিয়েছি, টাকা দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে। তাঁরা পারবেনও না। কারণ, তাঁদের লক্ষ্য থাকে কেবল লুটপাটের দিকে।’