নারীকে অধিকার চর্চার পরিবেশ দিতে হবে

গোলটেবিল বৈঠকে (বাঁ থেকে) কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, সাংসদ আশেক উল্লাহ ও পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের উপপ্রধান মনিরুল ইসলাম। প্রথম আলো
গোলটেবিল বৈঠকে (বাঁ থেকে) কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, সাংসদ আশেক উল্লাহ ও পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের উপপ্রধান মনিরুল ইসলাম। প্রথম আলো

কোনো মেয়ে যৌন হয়রানির শিকার হলে তাঁকে দ্রুত বিয়ে দিতে চায় পরিবার। এটি কোনো সমাধান না হলেও পরিবারের চাপে মেয়েটি বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সবার আগে অভিভাবকদের সচেতন করা দরকার—এই মত কোনো বিশেষজ্ঞের নয়। ‘সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন এবং মা ও শিশুস্বাস্থ্যের সুরক্ষা’ নিয়ে গতকাল শনিবার প্রথম আলো আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে নিজের এই উপলব্ধির কথা জানান কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শবনম মোস্তারি।

নারীর স্বাস্থ্য ও জীবনমান উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নের জন্য ওই শিক্ষার্থীর পাশাপাশি নিজেদের যুক্তিপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন সাংসদ, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, উন্নয়নকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাঁদের প্রায় সবার বক্তব্যে উঠে এসেছে, নারীকে শুধু তাঁর অধিকারের কথা জানালেই হবে না। অধিকার সম্পর্কে সচেতনও করতে হবে। একই সঙ্গে নিজের প্রাপ্য অধিকার যাতে নারী চর্চা করতে পারে, সে পরিবেশও সৃষ্টি করে দিতে হবে। এ জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন আলোচকেরা।

কক্সবাজার শহরের ‘সি-গাল’ হোটেলের সম্মেলনকক্ষে গতকাল সকালে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে সহযোগী ছিল জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)। বৈঠক সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।

বৈঠকে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ বলেন, শিক্ষা, ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিলেও সমন্বয়ের অভাবে সেগুলোর সফল বাস্তবায়ন হয় না।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের উপপ্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, এমডিজিতে (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) যে কয়টা দেশ ভালো করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তেমনিভাবে এসডিজিতে (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) সফলতা অর্জন করতে হলে সরকারের প্রতিটি দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় দরকার। কারণ, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে যখন সড়ক যোগাযোগের প্রশ্ন আসে, তখন সেটির দায়িত্ব পড়ে সড়ক মন্ত্রণালয়ের। তাই সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এসডিজি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, দেশের কোন এলাকার নারীদের কী ধরনের সমস্যা, এ তথ্য কারও কাছে নেই। কোনো বিষয়ের ওপর কাজ করতে চাইলে আগে সঠিক তথ্য দরকার। তিনি বলেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো শুধু শহর এলাকায় কাজ করতে চায়। কুতুবদিয়ার মতো দুর্গম উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনার অবস্থা খুবই নাজুক। কিন্তু সেখানে কেউ কাজ করতে চায় না। কুতুবদিয়ার মতো উপকূলীয় এলাকার অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য আরও বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।