অস্ত্র-বোমাসহ জেএমবির তিনজন আটক

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জামিরা গ্রাম থেকে তিনজনকে আটক করেছে র‍্যাব। র‍্যাব জানিয়েছে, রোববার ভোরে অস্ত্র, বোমা ও বোমা তৈরির নানা সরঞ্জামসহ আটক ওই তিনজন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সক্রিয় সদস্য।

আটক ব্যক্তিরা হলেন শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ (৪৫), জাকারিয়া হোসেন ওরফে জাক্কার (৪৩) ও আতাউর রহমান ওরফে আহসান হাজি। শরিফুলের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে। আর আতাউর ও জাকারিয়া একই উপজেলার চাকলা গ্রামের বাসিন্দা।

আটকের পর বেলা ১১টার দিকে ওই তিনজনকে র‌্যাব-৫-এর সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। সেখানে র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক মাহবুবুল আলম বলেন, এই তিন জঙ্গির কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, আটটি গুলি, চারটি তাজা বোমা ও বোমা তৈরির নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫০০ গ্রাম গানপাউডার, তাতাল, বৈদ্যুতিক তার, রাংতা, স্কচটেপ, ৫০ গ্রাম সোডা ও সমপরিমাণ চুন। এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে দুটি জিহাদি বই, একটি বড় ছুরি, একটি ইপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, টাকা আদায়ের চারটি রশিদ, চারটি মুঠোফোন, পাঁচটি সিম কার্ড ও নগদ ৪ হাজার ৮৮০ টাকা। ঘটনাস্থলেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।

মাহবুবুল আলম বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর তানোর উপজেলা থেকে তিন জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়। তাঁরা র‌্যাবকে জানান, জিয়াউর ওরফে জিয়াউল ওরফে জাকিউর ওরফে জিয়া নামে এক ব্যক্তি রাজশাহী অঞ্চলে জেএমবির দায়িত্বশীল নেতৃত্বে থেকে সংগঠনকে মাঠপর্যায়ে সংগঠিত করার চেষ্টা করছে। তার নেতৃত্বে সংগঠনের কিছু সদস্য রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গোপনে মিলিত হচ্ছে এবং নাশকতার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এই দলটিকে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে র‌্যাব। একপর্যায়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা জানতে পারেন, শনিবার দিবাগত রাতে পুঠিয়ার জামিরা এলাকায় কয়েকজন জেএমবি সদস্য গোপন বৈঠকে বসেছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫-এর একটি বিশেষ অভিযান দল জামিরা গ্রামের ডা. বদি নামে এক ব্যক্তির ডালের মিল ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাল মিল-সংলগ্ন টিনশেড বারান্দা থেকে কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে অস্ত্র, বিস্ফোরক ও জিহাদি বইসহ আটক করা হয় এই তিন জঙ্গিকে।

র‍্যাব-৫-এর অধিনায়ক আরও বলেন, আটক তিন জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া পলাতক জঙ্গি জিয়াকে র‌্যাব ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর আটক এই তিন জঙ্গির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।