ভেতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাইরে আ.লীগের সংঘর্ষ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সমাবেশে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের ব্যাপক মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাউফল, পটুয়াখালী, ২৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সমাবেশে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের ব্যাপক মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বাউফল, পটুয়াখালী, ২৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

সুধী সমাবেশে স্লোগান দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার পটুয়াখালীর বাউফল থানা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। ওই সময় থানা ভবনের মধ্যে অবস্থান করছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সমাবেশের শুরুতে এক পক্ষ স্লোগান দেয় চিফ হুইপ ও স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজের পক্ষে এবং আরেক পক্ষ স্লোগান দেয় বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষে। এ নিয়ে ওই দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে এর আগেই ছাত্রীরা আতঙ্কে ওই স্থান ছেড়ে চলে যায়।

বাউফল থানার নতুন চারতলা ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সকাল নয়টা থেকেই স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত হতে থাকেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে থানার অদূরে হেলিকপ্টারে করে বাউফল সরকারি পাবলিক মাঠে নামেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে ১১টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও বিশেষ অতিথি চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ যৌথভাবে ভবনের উদ্বোধন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ তাঁদের নেতাদের পক্ষে প্রধান অতিথিকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
প্রধান অতিথি নতুন থানা ভবনের মধ্যে ঢুকলে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও চেয়ার দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটানোতে অংশ নেয় দুই পক্ষই। প্রায় ১৫-২০ মিনিটের মতো চলে ওই সংঘর্ষ।
এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মো. জহিরুল (৩০), মো. কামাল হোসেন (২৫), আলতাফ উদ্দিন (৬৫), মিজানুর (৪৫), মো. খোকনকে (৩৫) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আসার পর দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসানের সভাপতিত্বে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় বক্তৃতা করেন চিফ হুইপ ও স্থানীয় সাংসদ আ স ম ফিরোজ, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, বরিশাল বিভাগের পুলিশের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আজাদ মিয়া, জেলা প্রশাসক মাছুমুর রহমান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান, বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জিয়াউল হক প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৭৮ টি দেশের মধ্যে আমেরিকার একটি সংস্থা সমীক্ষা চালিয়েছে, কারা দুর্নীতিমুক্ত দেশ প্রধান এবং কারা দেশের নেতৃত্বে সফল। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় স্থানে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী না হয়ে যদি তিনি অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হতেন, তাহলে তিনিই প্রথম হতেন। আর এটাই বাস্তবতা। তাঁর হাতে বাংলাদেশ। সে জন্যই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে। এটা সবাইকে ধরে রাখতে হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকার বিকল্প নেই।