নিবন্ধন ভবনে ফের বালাম চুরি

বালাম বই চুরি করে পালাচ্ছে একজন। ছবি: সংগৃহীত
বালাম বই চুরি করে পালাচ্ছে একজন। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নিবন্ধন বিভাগের মহাফেজখানায় (রেকর্ড রুম) আবারও চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা রেকর্ডরুমে ঢুকে বেশ কয়েকটি বালাম বই (দলিলসংক্রান্ত ভলিউম) নিয়ে গেছে। রোববার ভোররাত চারটা থেকে সকাল ছয়টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে, যা একাধিক গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এ বিষয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা হয়েছে।

ঢাকার রেজিস্ট্রেশন ভবনের রেকর্ডরুমে ১৭৯৪ সাল থেকে দলিল সংরক্ষিত আছে। এই রেকর্ডরুম থেকে প্রতিবছরই একাধিকবার বালাম বই চুরির ঘটনা ঘটে। নিবন্ধন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দলিল চুরি বা নষ্ট করার মাধ্যমে অন্যের জমি দখল করার জন্য একটি জালিয়াতচক্র এই কাজ করছে।

নিবন্ধন ভবনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, এই চুরির সঙ্গে ঢাকার নিবন্ধন বিভাগের কর্মচারীরাই জড়িত। দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

ঢাকা জেলার রেকর্ডরুমে নজরদারির জন্য ১৫২টি গোপন ক্যামেরা বসানো আছে। রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন। চোরেরা নিজেদের আড়াল করতে কয়েকটি ক্যামেরার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। তবে তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। বেশ কিছু ক্যামেরায় কমপক্ষে দুজন চোরের অবয়ব ও কর্মকাণ্ড ধরা পড়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েকজন একজনকে শনাক্তও করেছেন।

ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে দুই ব্যক্তি রেকর্ডরুমের নিচতলার ভারী দলিল-দস্তাবেজ নিয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছেন। ৫টা ৫৫ মিনিটে এক ব্যক্তি নিজের বগলের নিচে ও দুই হাতে ব্যাগভর্তি কাগজপত্র নিয়ে রেকর্ডরুম থেকে বেরিয়ে যান।

ঢাকার জেলা রেজিস্ট্রার দীপক কুমার সরকার ২০১৬ সালের নভেম্বরে দায়িত্ব নেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূল্যবান দলিলের নিরাপত্তার জন্য রেকর্ডরুমে ক্যামেরা বসানো হয়।

দীপক কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এই রেকর্ডরুমে যেসব দলিল রয়েছে, তা একবার চুরি হয়ে গেলে আর ফিরে পাওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে নিরাপত্তার জন্য ক্যামেরা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সশস্ত্র নিরাপত্তা। কিন্তু রাতে পুরো ভবনটি পাহারা দেন একজন নাইটগার্ড। পুলিশি পাহারার ব্যবস্থার জন্য একাধিকবার লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু কাজ হয়নি।