স্বজনদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

নেপালে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে সোমবার দুপুরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজে ছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক ও মেহেদী হাসান দম্পতির পাঁচ সদস্য। তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে এখনো জানতে পারেনি তাঁদের পরিবার। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা।

দুই পরিবারের ওই পাঁচ সদস্য হলেন উপজেলার নগরহাওলা গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে ফারুক আহমেদ (৩২), তাঁর স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি (২৫), তাঁদের একমাত্র সন্তান প্রেয়সী (৩), নগরহাওলা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান অমিও (৩৩) ও তাঁর স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তার (২৫)। ফারুক পেশায় একজন ফটোগ্রাফার, মেহেদী হাসান পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। ফারুক ও মেহেদী হাসান সম্পর্কে মামাতো–ফুফাতো ভাই।

উভয় পরিবারই ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নেপাল যাচ্ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন তাঁদের বন্ধু ফরহাদ হক।

মেহেদী হাসানের মা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে কাঠমান্ডু থেকে ফোন করেছিল। সে জানিয়েছে, সে, তাঁর স্ত্রী কামরুন্নাহার ও ফারুক আহমেদের স্ত্রী অ্যানি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু বাকি দুজনের খোঁজ তিনি দিতে পারেননি।

শুধু এই পরিবারের স্বজনেরাই নয়, উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন অন্য পরিবারের স্বজনেরাও। কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত ইউএস–বাংলার উড়োজাহাজে মোট ৬৭ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ৩২ জনই বাংলাদেশি। বাকিদের মধ্যে ৩৩ জন নেপালি, একজন চীন এবং একজন মালদ্বীপের নাগরিক।

এই ফ্লাইটেই যাত্রী ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জনসংযোগ কর্মকর্তা সানজিদা বিপাশা, তাঁর স্বামী একসময় সাংবাদিকতা করা রফিক জামান রিমু ও তাঁদের ছয় বছর বয়সী ছেলে অনিরুদ্ধ।

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো খোঁজ পাননি। তিনি বলেন, খবর নেওয়ার চেষ্টা করছি, ‘আমরা খুবই চিন্তিত।’

এই ফ্লাইটে ছিলেন বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদ। এই টেলিভিশনের একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, ফয়সাল ছুটিতে ছিলেন। তাঁর ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন।

কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন রিজওয়ানুল হক ও তাঁর স্ত্রী তানভীন তাহিরা শশী। রিজওয়ানুলের বন্ধু আনিসুল হক বলেন, ‘কলেজজীবন দুজন এক কক্ষে থেকেছি। ঢাকাতেও আমাদের বাড়ি ছিল পাশাপাশি। মিরপুরে থাকতাম আমরা। কয়েক দিন আগে ওরা বসুন্ধরায় চলে যায়।’

রিজওয়ান সরকারি চিকিৎসক। ৩৩তম বিসিএসে চিকিৎসা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন তিনি। রিজওয়ানের বাবা চিকিৎসক এবং শ্বশুরও চিকিৎসক। রংপুর মেডিকেলে ইন্টার্ন করার সময় শাওনের সঙ্গে তানভীন তাহিরা শশীর বিয়ে হয়। এ দম্পতি বেড়াতে যাচ্ছিলেন নেপাল।

অন্যদিকে নেপালের কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস বাংলার বিমানে যাত্রী ছিলেন সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ১৯তম ব্যাচের ১৩ শিক্ষার্থী। তাঁরা সবাই নেপালি বংশোদ্ভূত।