সুন্দরগঞ্জ উপনির্বাচনে ভোট শুরু

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সরকারদলীয় সাংসদ গোলাম মোস্তফার মৃত্যুর পর এই আসনের উপনির্বাচন হচ্ছে।

সকাল আটটা থেকে ভোট নেওয়া শুরু হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সকাল আটটায় ভোট নেওয়া শুরু হলেও ভোটারদের উপস্থিতি কম। সুন্দরগঞ্জের উত্তর সাহবাজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে কোনো ভোটারের উপস্থিতি নেই। দু-একজন করে এসে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। জামালহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের একই অবস্থা। সকাল পৌনে নয়টায় ১০ থেকে ১২ জন ভোট দিয়েছেন। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ফজলে রাব্বী বলেন, পুরুষ দু-একজন করে আসছেন। তবে নারীরা এখনো আসেননি। বেলা বাড়লে ভোট বাড়বে। এখানে মোট ভোটার ২ হাজার ১৯৬ জন।

সাড়ে আটটায় একই উপজেলার রামদেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, কোনো ভোটারের উপস্থিতি নেই। কর্মকর্তারা হাত গুটিয়ে বসে আছেন। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, এখানে মোট ভোটার ৫ হাজার ৩ জন। সকালে দুই-তিনজন ভোট দিয়ে গেছেন। তবে পরে ভোটার আসবেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি সকালে অনেক কেন্দ্র ঘুরেছি। ভোটার বাড়বে। নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেই। উপজেলার মোট ১০৯টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে। এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৪৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬২ হাজার ৪৫৭ জন এবং নারী ১ লাখ ৭০ হাজার ৪৯২ জন। এর মধ্যে ৮৩টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।’

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের ভোট দিচ্ছেন এক ভোটার। সুন্দরগঞ্জ, ১৩ মার্চ, ২০১৮। ছবি: মঈনুল ইসলাম
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের ভোট দিচ্ছেন এক ভোটার। সুন্দরগঞ্জ, ১৩ মার্চ, ২০১৮। ছবি: মঈনুল ইসলাম

সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণে উপজেলায় চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপনির্বাচনে শঙ্কা কাটাতে পুরো উপজেলাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। ভোটের দিন উপজেলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে প্রায় চার হাজার ২০০ পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও আনসার-ভিডিপি। এর মধ্যে আট প্লাটুন বিজিবি। দুর্গম চরাঞ্চলের ভোটকেন্দ্রগুলোয় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। রয়েছে নৌ-পুলিশ। এ ছাড়া ২৫ জন নির্বাহী ও চারজন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ আসনের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর পর গত বছরের ২২ মার্চ সুন্দরগঞ্জ আসনে উপনির্বাচন হয়। এতে আওয়ামী লীগের টিকিটে সাংসদ নির্বাচিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা আহম্মেদ। তিনিও গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফা উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

সুন্দরগঞ্জ আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আফরুজা বারী, জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির জিয়া জামান খান ও গণফ্রন্টের শরিফুল ইসলাম।