'সরকারি কর্মচারীরাও অংশ নেন আ.লীগের সমাবেশে'

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সমাবেশে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসা হয়। এমনকি সরকারি কর্মচারীরাও অংশ নেন। অথচ বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না সরকার।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির যৌথ প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আমীর খসরু এ মন্তব্য করেন। চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে জনসভা সফল করতে তাঁর মেহেদীবাগের নিজ বাসভবন চত্বরে এই প্রস্তুতি সভা হয়। আগামী বৃহস্পতিবার বিকেলে লালদীঘি ময়দানে বিএনপি সমাবেশের ডাক দিয়েছে। কিন্তু আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত লালদীঘি ময়দান ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি পুলিশ।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মাসুদ উল হাসান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির সমাবেশের ব্যাপারে কাল (বুধবার) সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে দায়িত্বশীল একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, লালদীঘি ময়দানে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিকল্প হিসেবে নগরের অন্য কোথাও বিএনপি সমাবেশ করার অনুমতি পেতে পারে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি বৃহস্পতিবার লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের ডাক দেয়। বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সমাবেশে থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আজ মেহেদীবাগের প্রস্তুতি সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, লালদীঘি ময়দানে চট্টগ্রামের জনগণ সভা করতে প্রস্তুত এবং সেখানেই সর্ববৃহৎ জনসভা হবে। জায়গা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে না ভুগে জনসভা সফল করতে তিনি উপস্থিত নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সভা সমাবেশ করতে চায়। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার। লালদীঘি ময়দানে সমাবেশ করতে অনুমতি না দিলে তা হবে সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ।

আমীর খসরু বলেন, দেশে যদি সংবিধান থাকে, নাগরিক অধিকার থাকে, তাহলে অবশ্যই লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের অনুমতি দিতে হবে। কারণ, নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। বিএনপি গণতন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তাই দলের নেতা-কর্মীদের কোনো ভয় নেই। আর এই পথই হচ্ছে মুক্তির পথ। যদি কেউ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কিংবা আইনের শাসনের বিপরীতে চলে, তাহলে জনগণের কাছে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেমের সঞ্চালনায় প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রোজী কবির এবং এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও চট্টগ্রাম নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ান। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিবার পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক মহসিন জিল্লুর, সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুন উর রশিদ, সাবেক সাংসদ মোস্তফা কামাল পাশা প্রমুখ।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক বলেন, খালেদা জিয়াকে সরকার কারাগারে বন্দী রেখেছে। কিন্তু দেশের গণতন্ত্র, বাক্‌স্বাধীনতা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু আজ বন্দী।

মাহবুবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের ইচ্ছেমতো সভাসমাবেশ করছে। কিন্তু বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে। কিন্তু কোনো গড়িমসিতে কাজ হবে না। ১৫ মার্চ লালদীঘি ময়দানে বিএনপির সমাবেশ হবে।

নোমানের বাসায় প্রস্তুতি সভা
এদিকে ১৫ মার্চের সমাবেশ সফল করতে নগর বিএনপির সহসভাপতি আশরাফ উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ বেলা ১১টায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের চট্টগ্রাম নগরের ভিআইপি টাওয়ারের বাসভবনে আরেকটি প্রস্তুতি সভা হয়। এতে চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী, ডবলমুরিং, হালিশহর) আসনের অধীনে পাঁচ থানা ও নয়টি ওয়ার্ডের দলীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ ছাড়া নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম উপস্থিত ছিলেন ওই সভায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নোমান উপস্থিত থাকতে পারেননি।

প্রস্তুতি সভায় বক্তারা বলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনসভায় উপস্থিত থাকতে হবে। কোনো ধরনের উসকানিতে পা না দিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান বক্তারা।