দুর্বৃত্তদের ব্লেডে ক্ষতবিক্ষত কলেজছাত্রী

>
  • বুধবার রাতে কলেজছাত্রীর শরীর ক্ষতবিক্ষত করে দুর্বৃত্তরা।
  • বৃহস্পতিবার এক তরুণকে আটক করে পুলিশ।
  • কলেজছাত্রী এখনো শঙ্কামুক্ত নন।

ভোলার দৌলতখান উপজেলার কলাকোপা গ্রামে গত বুধবার রাতে এক কলেজছাত্রীর শরীর ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষতবিক্ষত করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক তরুণকে আটক করেছে পুলিশ।

ওই ছাত্রীর নাম শারমিন আক্তার (২০)। তিনি ভোলা সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। থাকেন কলাকোপা গ্রামে নানাবাড়িতে মা তাছনুর বেগমের সঙ্গে। তাঁকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শারমিন বলেন, ‘রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘুম থেকে উঠে পানি পান করতে কলসির কাছে যাই। এ সময় মুখোশ পড়া চার সন্ত্রাসী আমার চোখ-মুখ, পা ও হাত বেঁধে ফেলে। চিৎকার করলে সন্ত্রাসীরা খুন করার হুমকি দেয়। পরে সন্ত্রাসীরাই ব্লেড দিয়ে সারা শরীরে আঘাত করতে থাকে। এ সময় চিৎকারের চেষ্টা করলে কী যেন খাইয়ে দেয়। একপর্যায়ে আমাকে টেনে-হিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। এটুকুই মনে আছে।’

শারমিন আরও জানান, ঘটনার সময় ঘরে তাঁর মা, দুই ভাই ও খালাতো ভাই থাকলেও ঘুমাচ্ছিলেন। তাঁর ধারণা, সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আগে থেকেই নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে তাঁদের ঘুমিয়ে রেখেছিল। উচ্চতা ও কথা শুনে দুজনকে তিনি সন্দেহ করছেন। একজন মো. জিন্নাহ। দূর সম্পর্কে মামা হলেও তিনি প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। আরেকজন মো. তুহিন। তাঁদের সঙ্গে মায়ের জমি নিয়ে বিরোধ আছে। তুহিনের বাবা শাহাবুদ্দিন তাঁর মা-খালাকে বাড়ি থেকে উৎখাত করতে চান।

তাছনুর বেগম বলেন, ফজরের আজান হলে বাগানের ভেতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাশের বাড়ির লোকজন শারমিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

গতকাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শারমিনের কপাল থেকে শুরু করে পায়ের তলা পর্যন্ত, মুখমণ্ডল, পিঠ, হাতসহ পুরো শরীরে ব্লেডের কাটা দাগ। অনেক স্থানে গভীর ক্ষত। বেশি ক্ষত মুখে। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তৈয়বুর রহমান বলেন, ব্লেডের আঁচড়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন।

আটক হওয়ার আগে মো. তুহিন বলেন, তাঁদের সঙ্গে শারমিনের পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ নেই। তিনি বুধবার রাতে বাড়িতে ছিলেন না। আর মো. জিন্নাহ বলেন, ‘শারমিন আমার ভাগনি। তাঁকে কেন প্রেম বা বিয়ের প্রস্তাব দেব?। এ অভিযোগ মিথ্যে।’

দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, শারমিনের মা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে তুহিন নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আসামিদের ধরা হবে।