বাল্যবিয়ের অভিযোগ তুলে টাকা আদায়?

কলেজছাত্রীটির বিয়ে হয়েছে আগেই। গত বৃহস্পতিবার আয়োজন করা হয়েছিল অনুষ্ঠানের। বাল্যবিবাহের অভিযোগ তুলে ওই অনুষ্ঠান থেকে কনের বাবাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ভয় দেখিয়ে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেছে। এই ঘটনা মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে ওই কলেজছাত্রীর বিয়ে হয়। তাঁর বয়স ১৮ বছরের বেশি। উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ওই ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যান খাসেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. রাজিবুল। তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে তিনি মেয়েটির বাবার কাছে টাকা দাবি করেন। পরে মেয়েটির এক আত্মীয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে টাকার বিষয়ে আপসরফা করেন রাজিবুল। এ বিষয়ে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড প্রথম আলোর কাছে রয়েছে। এতে এএসআই রাজিবুল ওই আত্মীয়কে বলছেন, ‘না না ১০ হাজারে হবে না। ওটার ডাবল করতে হবে। এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত রয়েছে। আমার আইসি স্যার (মহিদুল ইসলাম) ১০ হাজারে মানবে না। যদি ২০ হাজার টাকা দেন তাইলে মিটমাট হতে পারে।’

মেয়েটির বাবা বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খুব চাপের মধ্যে আছি। আমি আর কোনো পুলিশের ঝামেলায় জড়াতে চাই না।’

এ সম্পর্কে এএসআই রাজিবুল বলেন, ‘এই অভিযোগ সত্য নয়। মেয়েটির বাবাকে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। এরপর কী হয়েছে, সেটা আমি জানি। তবে, পরের বিষয় আইসি মহিদুল স্যার জানে।’

খায়েরহাট তদন্ত কেন্দ্রের আইসি (পরিদর্শক) মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েটির বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখানে এনেছিলাম। পরে জানতে পারি, ওই মেয়েটির অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। পরে ছেড়ে দিই। তাঁর কাছে কোনো টাকাপয়সা চাওয়া হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হলে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কিংবা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম সঙ্গে থাকতে হয়। পুলিশের একা বাল্যবিবাহ বন্ধ করা বা বিয়েবাড়িতে যাওয়ার এখতিয়ার নেই।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘ওই পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার কাছে অভিযোগ না দিলে কিছুই করার থাকে না।’