রংপুরে খাদেমকে হত্যার দায়ে ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড
রংপুরে মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় আদালত সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে ছয়জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী (৩৩), সদস্য ইছাহাক আলী (৩৪), লিটন মিয়া ওরফে রফিক (৩২), সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুল (৩০), সরওয়ার হোসেন সাবু ওরফে মিজান (৩০), উত্তরাঞ্চলের কমান্ডার বিজয় ওরফে আলী ওরফে দরজি (৩০), চান্দু মিয়া (২০)।
খালাসপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন জেএমবির সদস্য আবু সাঈদ (৩০), তৌফিকুল ইসলাম সবুজ (৩৫), সাদাত ওরফে রতন মিয়া (২৩), জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী (২৬), বাবুল আখতার ওরফে বাবুল মাস্টার (৩৫) ও রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ওরফে বাঁধন (২৫)।
১৩ আসামির মধ্যে দুজন পলাতক রয়েছেন। তাঁরা হলেন চান্দু মিয়া (২০) ও রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ওরফে বাঁধন (২৫)।
২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার সময় রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চৈতার মোড়ে মাজার শরিফের খাদেম রহমত আলীকে (৬০) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন ১১ নভেম্বর তাঁর ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত ১৩ আসামির মধ্যে ১১ জন কারাগারে আছেন। তাঁদের আজ সকাল সাড়ে নয়টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল ১০টা ১০ মিনিট থেকে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটব্যাপী ৬৮ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শোনান বিচারক।
রায়ের পর্যালোচনায় বিচারক বলেন, ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে কিছু মানুষ ইসলাম থেকে ভুল পথে গিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে। অশান্তি সৃষ্টি করে। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা পেয়ে তাঁরা সংঘবদ্ধ হয়ে মাজারের খাদেমকে জবাই করে হত্যা করেন। তাই জঙ্গি তৎপরতারোধে আরও কঠোর হতে হবে।
সরকারি কৌঁসুলি রথীশ চন্দ্র ভৌমিক জানান, এ মামলায় ৫২ সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এই মামলার ১৩ আসামির মধ্যে মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া ওরফে রফিক এবং সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুলকে রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোসি হত্যা মামলায় গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন একই আদালতের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার।