ভুয়া সনদে কনস্টেবল পদে চাকরির চেষ্টা, গ্রেপ্তার ৮

বগুড়ায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও ঠিকানা জালিয়াতির মাধ্যমে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন চাকরিপ্রত্যাশী।

বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র বলছে, এই প্রতারক চক্রের নেটওয়ার্ক দেশব্যাপী। এ পর্যন্ত তারা আরও চার প্রতারকের নাম-ঠিকানা পেয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে নতুন নতুন প্রতারকের নাম জানা যাচ্ছে।

গতকাল শনিবার চাকরিপ্রত্যাশী পাঁচ ব্যক্তির তথ্যের ভিত্তিতে বাকি তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ রোববার বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে প্রকাশ করে জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এই আট ব্যক্তিসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে গতকালই সনদ ও স্থায়ী ঠিকানা জালিয়াতির মামলা করেছেন বগুড়া পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ কর্মকর্তা ও উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের। বর্তমানে তাঁরা কারাগারে আছে।

ডিবি পুলিশের ভাষ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া আটজনের মধ্যে সনদ ও ঠিকানা জালিয়াতি চক্রের মূল হোতা রফিকুল ইসলাম ও তাঁর দুই সহযোগী রয়েছে। রফিকুল জয়পুরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে স্টেনো কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত। তাঁর বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়। তাঁর দুই সহযোগী হলো একই এলাকার আবদুল মান্নান ও জাকির হোসেন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও স্থায়ী ঠিকানা জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশী গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ ব্যক্তি হলেন মিল্লাত হোসেন, আইনুর ইসলাম, মনির হোসেন, আল আমিন ও জুয়েল হাসান। এর মধ্যে মিল্লাত, মনির ও জুয়েল রানার বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়। আল আমিন দিনাজপুর এবং আইনুর জয়পুরহাট জেলার বাসিন্দা।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, ৬ মার্চ বগুড়া পুলিশ লাইনস মাঠে কনস্টেবল পদে প্রার্থী বাছাই পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে ২০০ পদের জন্য ৪ হাজার ৩০০ প্রার্থী অংশ নেন। মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ এবং স্থায়ী ঠিকানা জালিয়াতি করে বাছাই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় ১৪ জনকে চিহ্নিত করা হয়। ওই দিনই আটক করা হয় পাঁচ চাকরিপ্রত্যাশীকে। আটক ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে জালিয়াতি চক্রের হোতাসহ অন্যদের ধরতে গোয়েন্দা পুলিশকে মাঠে নামানো হয়।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আছলাম আলী বলেন, মোট ১২ জনকে আসামি করে এ মামলা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে ডিবি পুলিশ কাজ করছে।

গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সনদ জালিয়াতি চক্রের অন্যতম হোতা রফিকুল ইসলাম জয়পুরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে স্টেনো কাম অফিস সহকারী পদে কর্মরত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও স্থায়ী ঠিকানা জালিয়াতি করে আসছেন।

জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন রফিকুল সেখানকার কর্মচারী পদে কর্মরত বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রফিকুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।