কলেজছাত্র হত্যার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন

পিরোজপুরে একাদশ শ্রেণির কলেজছাত্র জাহিদুল ইসলামকে (১৮) হত্যার দায়ে রফিকুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিল্লুর রহমান এই রায় দেন। রফিকুল ইসলামকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।

রফিকুল ইসলামের বাড়ি মঠবাড়িয়া উপজেলার মধ্য সোনাখালী গ্রামে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাদুড়তলী গ্রামের হেমায়েত হোসেনের ছেলে ও স্থানীয় ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র জাহিদুল ইসলাম একই উপজেলার মধ্য সোনাখালী গ্রামের শহিদ রাজার কাছ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় একটি মুঠোফোন কেনেন। মুঠোফোন কেনার পর ফোনের সঙ্গে চার্জার দেওয়া কথা থাকলেও শহিদ রাজা জাহিদুল ইসলামকে চার্জার দেননি। এ ঘটনার কয়েক দিন পর ২০০৬ সালের ২৬ অক্টোবর বিকেল চারটার দিকে মধ্য সোনাখালী গ্রামের আলীপুর বাজারের ফারুক গাজীর দোকানের সামনে জাহিদুল ইসলাম শহিদ রাজার কাছে মুঠোফোনের চার্জার চান। এ সময় শহিদ রাজা চার্জার দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটির হয়। এরপর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফারুক গাজীর দোকানের সামনে দুই পক্ষ মীমাংসার জন্য বসে।

সালিস বৈঠকে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শহিদ রাজা ও রফিকুল ইসলাম রাজাসহ আসামিরা জাহিদুল ইসলামকে মারপিট করেন। এ সময় রফিকুল ইসলাম রাজা দোকানের ঝাপের লাঠি নিয়ে জাহিদুল ইসলামের মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত জাহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে জাহিদুল ইসলামের খালাতো ভাই রফিকুল ইসলাম কালাম বাদী হয়ে শহিদ রাজা ও রফিকুল ইসলাম রাজাসহ সাতজনকে আসামি করে স্থানীয় থানায় মামলা করেন।

২০০৯ সালের ৩১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন রফিকুল ইসলাম রাজাকে প্রধান আসামি করে সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক রফিকুল ইসলাম রাজাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অন্য ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন। আসামিপক্ষে ছিলেন আহসানুল কবির।