যৌতুক মামলায় 'সাহসী ছাত্রীর' বাবা কারাগারে

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সেই সাহসী ছাত্রী শারমীন আক্তারের মা গোলেনুর বেগমের করা যৌতুকের মামলায় বাবা কবির হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজাপুর বাইপাস মোড় থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

শারমীন আক্তার ২০১৫ সালে মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকায়। এ জন্য ২০১৭ সালে সাহসী নারী হিসেবে সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছ থেকে ‘উইমেন অব কারেইজ’ পুরস্কার পায়। এখন সে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়ে।

শারমীন আক্তার বলে, ওই মামলায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে হয়রানি করার জন্য তাঁর মা এ মামলা করেছেন। কারণ, সে সময় বাবা আমার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এই মামলা করার আগেই মায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন বাবা।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এক লাখ টাকা যৌতুক চাওয়ার অভিযোগে গত ২২ মার্চ ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে গোলেনুর বেগম মামলা করেন।

আরজিতে বাদী বলেন, ১৯৯৮ সালের ১০ অক্টোবর বিয়ের পর থেকেই গোলেনুরের কাছে কবির হোসেন যৌতুকের দাবি করে আসছিলেন। গত ১২ মার্চ যৌতুকের দাবিতে কবির দুই সন্তান শারমীন, ছায়েমসহ তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। ১৭ মার্চ রাজাপুরের আরুয়া সোনারগাঁ গ্রামে তাঁর বাবার বাড়িতে বৈঠকে প্রকাশ্যে কবির এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। না দিলে তাঁকে সংসারে নেবেন না বলে হুমকি দিয়ে যান।

এ বিষয়ে শারমীন বলে, ‘আমি আমার মায়ের কাছ থেকে ২০১৫ সাল থেকেই আলাদা থাকি। আমাদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। বাবা দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। তিনি গত ২ মার্চ দেশে আসেন। ৭ মার্চ মাকে তালাক দিয়েছেন বাবা। তাই আমার মায়ের যৌতুক মামলা মিথ্যা।’

কবির হোসেনের আইনজীবী আক্কাস শিকদার বলেন, মক্কেলের জামিনের আবেদন করেছি। আদালত আজ বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

এ বিষয়ে গোলেনুর বেগম বলেন, ‘আমি তালাকের কোনো কপি পাইনি।’