স্বাস্থ্য বাজেট ব্যবহারে দক্ষতার ঘাটতি আছে

ছবি: রয়টার্স
ছবি: রয়টার্স

স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ ও দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় কম। যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা-ও ঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় না। বাজেট ব্যবহারে সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছেন তাঁরা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিষয়ক নীতি আলোচনায় তাঁরা এ কথা বলেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এআরকে ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমপক্ষে ৬৫ মার্কিন ডলার (৫ হাজার ৩৯৫ টাকা) প্রয়োজন। বাংলাদেশে খরচ হচ্ছে ৩৭ মার্কিন ডলার (৩ হাজার ৭১ টাকা)। মাথাপিছু যে ব্যয় হয়, তার ৬৭ শতাংশ বহন করে ব্যক্তি নিজে। বাকি ৩৩ শতাংশ ব্যয় বহন করে সরকার, দাতা ও এনজিওরা। সরকার প্রতিবছর স্বাস্থ্য খাতে যে বরাদ্দ দেয়, তা-ও দক্ষতার সঙ্গে খরচ করতে পারেন না সরকারি কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে একাধিক বক্তা বলেন, সরকারি বরাদ্দের একটি অংশ অপচয় হয়, কিছু হয় চুরি। যুক্তরাজ্যের দাতা সংস্থা ডিএফআইডির স্বাস্থ্য উপদেষ্টা শেহলিনা আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্যে উন্নয়ন বরাদ্দের ৮০ শতাংশ খরচ হয়েছে, এমন শোনা যায় না। কেনাকাটায় জটিলতার কারণে টাকা খরচ হয় না। এ সমস্যা বহু বছরের। এ সমস্যা দূর করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই।
মূল উপস্থাপনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক বলেন, দেশে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি, ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার প্রকোপ, ২৪ ঘণ্টা সেবা দান, শহরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দান, প্রত্যন্ত এলাকায় সেবা পৌঁছানো এবং সব মানুষকে অত্যাবশ্যক সেবার আওতায় আনা বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার অর্থ হচ্ছে সবার কাছে প্রয়োজনের সময় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। এটা করতে হলে গ্রামে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দ, অংশীদারত্ব ও সরকারের কাজে সমন্বয় বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক মো. জাকির হোসেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির পরিচালক খালেদা ইসলাম বলেন, প্রতিটি দেশের অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্যাকেজ নিজের মতো করে তৈরি করে। ভারত ও নেপালের প্যাকেজ এক হয় না। বাংলাদেশের প্যাকেজও অন্যের মতো হবে না।