লিফটের চাপায় করুণ মৃত্যু

আলভিরা, পরিবারের কাছে এখন স্মৃতি
আলভিরা, পরিবারের কাছে এখন স্মৃতি

লিফটটি বন্ধ। বাইরে থেকে চকচকে। সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সময় ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মী বললেন, ‘কালকে আইলে দ্যাখতেন। কী রক্ত! মাইয়াডারে নিয়া চিক্কুর পাড়তে পাড়তে হ্যার (ওর) বাপ-মায় হাসপাতালে গেল। পরে শুনলাম মইরাই গ্যাছে গা। কী সুন্দর ফুটফুইট্যা আছিল।’

রাজধানীর শান্তিনগরের চামেলিবাগে গত বৃহস্পতিবার ১৮ তলা একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের লিফটের দুই দরজার চাপায় আলভিরা নামের ৯ বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুটি তার বাবা ব্যবসায়ী শিপলু রহমান ও মা উম্মে সালমার সঙ্গে ওই ভবনের ১৫ তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকত।

ভবনের বাসিন্দা ও নিরাপত্তাকর্মীরা বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সেজেগুজে বের হচ্ছিল পরিবারটি। পরিবারটি লিফটে ওঠার সময় শিশুটি ঢুকতে গেলে সজোরে দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এতে শিশুটি মাথায় আঘাত পায়, ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। পরে শিশুটিকে দ্রুত পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাধারণত লিফটের দরজার দুই পাশে সেন্সর থাকে। যার কারণে লিফটের দুই দরজার মাঝে কোনো মানুষ বা বস্তু পড়লে দরজাগুলো আর লাগে না। ভবনের বাসিন্দারা বলছেন, ওই লিফটের সেন্সরগুলো নষ্ট ছিল। শিশুটির মৃত্যুর পর থেকে লিফটের ত্রুটি নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা।

ভবনটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলমগীর মিয়া বলেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা। লিফটটি সাত-আট বছরের পুরোনো ঠিকই। তবে সেটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। লিফট অপারেটরও থাকেন।

এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম বলেন, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিনি ওই ভবনে গিয়েছিলেন। ততক্ষণে শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।