নাট্যবিনিময়ে সংস্কৃতির সেতু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম আলো ফাইল ছবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম আলো ফাইল ছবি

একই সংস্কৃতির সেতুর ওপরে বেজে উঠল দুই দেশের জাতীয় সংগীত। উঠল পতাকা। পঞ্চকবির গান আর নৃত্যে রচিত হলো ‘বাংলাদেশ-ভারত নাট্যোৎসব-২০১৮’।

‘মিলি মৈত্রীর বন্ধনে, গড়ি সংস্কৃতির সেতু’ স্লোগন সামনে রেখে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের উদ্যোগে ও ভারতীয় হাইকমিশনের সহযোগিতায় সাত দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল সিরাজী ভবন চত্বরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহান বাংলাদেশের পতাকা এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন। উৎসবের উদ্বোধনী পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, নাট্যজন মলয় ভৌমিক, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক বিভাগের সভাপতি সোমনাথ সিনহা।

উদ্বোধনের পরে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি উদ্বোধনস্থল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। এখানে নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে শুরু হয় উৎসবকথন পর্ব। উৎসবকথন পাঠ করেন নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক আরিফ হায়দার।

এতে উপাচার্য এম আবদুস সোবহান বলেন, নাটক হচ্ছে জীবনের প্রতিচ্ছবি। নাটক একটি দেশের সরকারের চরিত্র, শাসন, শোষণকে সাধারণ মানুষের সামনে খুব সহজভাবে তুলে ধরে।

হাসান আজিজুল হক বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যচর্চার দুর্জয় ঘাঁটি। এখানে দুর্বৃত্তদের কোনো স্থান নেই। ১৯৭১ সালের পর থেকে রাজশাহী অঞ্চলে নাট্যচর্চা দ্রুত এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, তাঁর বিশ্বাস, এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছরে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। দিনে দিনে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের মাত্রা বাড়ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই সম্পর্কের উন্নয়ন করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই উন্নয়ন হচ্ছে। তাঁরা চান সংস্কৃতির মাধ্যমে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ আরও দৃঢ় হোক।

মলয় ভৌমিক বলেন, নাটক হচ্ছে মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছার একটি মাধ্যম। বর্তমান সময় সব সমস্যা সমাধানে মানুষের কাছে পৌঁছাতে নাটকের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, নাটক মানুষের মুক্তির পথকে সহজ করে। আজকের বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রত্যক্ষ এই মাধ্যমের।

উৎসবে ভারত থেকে আগত অশোকনগর নাট্যমুখ, লোককৃষ্টি, শ্রুতি পারফামিং ট্রুপ এবং বাংলাদেশের বটতলা, প্রাচ্যনাট, সুবচন নাট্যদল, অনুশীলন নাট্যদল, ঢাকা থিয়েটার, লোক নাট্যদল, উত্তরাধিকার, মণিপুরি থিয়েটার, বাংলাদেশের পুতুলনাট্য গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ১৩টি নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল উদ্বোধনী দিনে ভারতের শ্রুতি পারফরমিং ট্রুপের নাটক ‘জয় জয় ভানু জয় জয়দেব’ মঞ্চস্থ হয়। নাটকটির নির্দেশক শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায়।