মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে সংসদীয় কমিটির সন্দেহ

বিভিন্ন উদ্যোগের পরও রাজধানীতে মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাজে ক্ষোভ ও অসন্তোষ জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। রাজধানীতে মশার যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, সে ওষুধের কার্যকারিতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে কমিটি। তারা এই ওষুধ পরীক্ষা করাতে দুই সিটি করপোরেশনকে নির্দেশনা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, মশা নিয়ে বৈঠকে কমিটির তোপের মুখে পড়েন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। মশার কারণে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হওয়ার ঘটনার সূত্র ধরে মশার উৎপাতের বিষয়টি কমিটির আলোচনায় আসে। কমিটির সদস্যরা মশার প্রকোপ বাড়ায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বৈঠকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়। কিন্তু মশার প্রকোপ সে তুলনায় না কমায় ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে কমিটি। কমিটির একজন সদস্য বলেন, মশা এত বেড়েছে যে ঢাকায় থাকাই যাচ্ছে না। কমিটি মশানিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলে এবং দুই সিটি করপোরেশনকে সতর্ক করে। সংসদীয় কমিটি মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

জানতে চাইলে কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা প্রথম আলোকে বলেন, রমজানের আগেই যাতে মশার প্রকোপ কমানো যায়, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংসদীয় কমিটি দুই সিটি করপোরেশনকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছে।

বৈঠকের অন্য একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমবায় কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিটি। কমিটি মনে করে, সমবায়ের নামে বিভিন্ন কো-অপারেটিভ ব্যাংকের নামে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর সঙ্গে সমবায়ের কর্মকর্তারাও জড়িত। একজন কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগও এ সময় আলোচনায় আসে। ওই কর্মকর্তাসহ দুজন কর্মকর্তার নামে ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করেছে। তবে সংসদীয় কমিটি মনে করে সমবায়ে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। বিষয়টি সামগ্রিকভাবে দেখা প্রয়োজন। তাই বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমবায় অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার জন্য সাবের হোসেন চৌধুরীকে আহ্বায়ক এবং এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান ও ফজলে হোসেন বাদশাকে সদস্য করে একটি উপকমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রাজিউদ্দীন আহমেদ, সাবের হোসেন চৌধুরী, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান ও ফজলে হোসেন বাদশা বৈঠকে অংশ নেন।