গানের পাখি লালগলা

লালগলা। ছবি: আদনান আজাদ
লালগলা। ছবি: আদনান আজাদ

সামনে থেকে সরাসরি দেখলে মনে হবে ছোট সুন্দর পাখিটির মাথা-কপাল ও ঘাড়জুড়ে একটি সাদা ক্রস আঁকা, চওড়া সাদা দুটি রেখার দৃষ্টিনন্দন সমন্বয়ে এই সাদা ক্রস চিহ্ন তৈরি হয়। বুকের ওপরের গালটুকু আলতা লাল, চোখের দুই পাশের নিচ থেকে কালো রং নেমে বুকের উপরিভাগকে ঘন-কালো করেছে, বুকের দুই পাশসহ পেটের দুই পাশের রং ছাই-ধূসর, বুকের নিচের অংশ, পেটসহ লেজের তলার অগ্রভাগ সাদা, লেজের তলার মাঝখানটা কালো। ঠোঁট ও পায়ের রংও কালো। মাথার তালু ছাই-কালো। চোখের ওপর দিয়ে ঠোঁটের দিকে বয়ে যাওয়া কালো-সরু রংটির জন্য তীক্ষ্ণÿ দৃষ্টিসম্পন্ন চকচকে চোখ দুটিকে দেখতে পাওয়া কষ্ট। আকার-গড়ন ও ধরন-চলনে আমাদের জাতীয় পাখি দোয়েলের মতোই। এরা দোয়েলের জাতভাই। তবে দোয়েলের চেয়ে (দোয়েলের দৈর্ঘ্য ২০ সেন্টিমিটার) দৈর্ঘ্যে মাত্র পাঁচ সেন্টিমিটার ছোট, অর্থাৎ এই পাখিটির দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার। মেয়ে ও পুরুষ পাখির রঙে কিছুটা তফাত রয়েছে।

এদের মূল খাদ্য নানা রকম পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ। কণ্ঠ মিষ্টি। ডাকে ‘শিরিল শিরিল’ বা ‘কিয়া কিয়া’ শব্দে। উঁচু জায়গার চেয়ে নিচু জায়গা পছন্দ, ঝোপঝাড়ে বেশি চরে।

বিরল পরিযায়ী এই সুন্দর পাখিটির নাম লালগলা। কালোবুক, লালগলা নামেও ডাকা যেতে পারে। ইংরেজি নাম Chinese Rubythroat। বৈজ্ঞানিক নাম Calliope tschebaiewi। ক্বচিৎ এদের দেখা মিলতে পারে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওর এলাকায়।