মাকে মারধরের অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে

পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলায় ছেলের বিরুদ্ধে মাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় মা শামসুন্নাহার স্বজনদের বাড়িতে থাকছেন।

যদিও ছেলে আশরাফ-উজ-জামান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ছেলে আশরাফের বিরুদ্ধে মামলা করেন মা শামসুন্নাহার। তখন ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে থানায় মুচলেকা দিয়ে এবং ভবিষ্যতে মাকে আর মারধর করবেন না—এমন লিখিত বক্তব্য দিয়ে ছেলে ছাড়া পান। কিন্তু চলতি বছরের ১ মার্চ শামসুন্নাহারকে মারধরের অভিযোগে বাড্ডা থানায় আবার মামলা করেন মেয়ে তাহমিনা আক্তার। এই মামলায় আশরাফকে গ্রেপ্তার করলে ১২ মার্চ জামিন নিয়ে বের হয়ে আসেন।

পুলিশ বলছে, বাড্ডাতে এই পরিবারের নির্মাণাধীন পাঁচতলা একটি বাড়ি রয়েছে। এর ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েই পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

মা শামসুন্নাহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছেলের সঙ্গে থাকি না অনেক দিন। ওর সামনাসামনি হই না। ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ছেলে ঘরের দরজা ভেঙে আমার চুলের মুঠি ধরে দেয়ালে আঘাত করে। তারপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরে দেখি মিটফোর্ড হাসপাতালে।’ মায়ের অভিযোগ, এর আগেও একাধিকবার তাঁর ছেলে তাঁকে মেরেছেন।

এই পরিবারের এক আত্মীয় বলেন, শামসুন্নাহারের এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বিবাহিত। বাড়িটি তিনি মৃত স্বামীর জমি বিক্রি করা টাকা ও কিছু ঋণ করে তৈরি করছিলেন। বাড়ি নিয়েই পারিবারিক দ্বন্দ্ব। মা ও মেয়ের অভিযোগ, ছেলে পুরো বাড়িটাই নিতে যাচ্ছেন। মা-বোনকে কিছু দিতে চাইছেন না। আর ছেলের অভিযোগ, বোন ও বোনের স্বামী সম্পত্তি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী ওয়াজেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মা-ছেলে ও বোনের অভিযোগের জন্যই আলাদা একটি থানা লাগবে। থানায় একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) রয়েছে। তাঁর দাবি, ‘দুই পক্ষের ইগো সমস্যার কারণে কোনো সমাধান হচ্ছে না।’

মামলার বিষয়ে ছেলে আশরাফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মায়ের শরীরে তিনি হাত তোলেননি। মা পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছেন। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, সম্পত্তি নিয়ে তাঁর বোন ও বোনের স্বামী তাঁকে হয়রানি করছেন।

জানা গেছে, এই পারিবারিক সমস্যার সমাধানে স্থানীয় লোকজন সালিসও ডাকে। সেই সালিসের এক সদস্য হেদায়েতউল্লাহ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমস্যা সম্পত্তি নিয়ে। প্রথমবার সালিসে আমরা চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ঝামেলা মেটানো যায়নি।’