স্বেচ্ছাশ্রমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার

মাদারগঞ্জ উপজেলার নাদাগাড়ী গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজ চলছে। গত শুক্রবার নাদাগাড়ী গ্রাম থেকে তোলা। প্রথম আলো
মাদারগঞ্জ উপজেলার নাদাগাড়ী গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজ চলছে। গত শুক্রবার নাদাগাড়ী গ্রাম থেকে তোলা। প্রথম আলো

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার নাদাগাড়ী গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে। ছায়ানীড় সংঘ নামের স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওই বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। শুক্রবার থেকে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। এতে গ্রামবাসীও যোগ দিয়েছেন। এই সংস্কারকাজ শেষ হতে ১০-১২ দিন লাগবে।

গত শুক্রবার সকাল নয়টার মধ্যে নাদাগাড়ী গ্রামের শতাধিক মানুষ একত্র হন। পরে তাঁরা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধের সংস্কারকাজ শুরু করেন। সবাই কোদাল ও টুকরি (ঝুড়ি) নিয়ে মাটি কেটে ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশে ফেলেন। এতে ছায়ানীড় সংঘের সদস্য ও শ্রমজীবী মানুষ অংশ নিয়েছেন।

ছায়ানীড় সংঘের কয়েকজন সদস্য ও ওই গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৪ সালে নাদাগাড়ী গ্রামে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বাঁধটির দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন কিলোমিটার। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অর্থায়নে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এরপর গত ১৪ বছরে বাঁধটির আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। গত বছরের আগস্ট মাসের বন্যায় পানির স্রোতে বাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙে যায় ও বাঁধ থেকে মাটি সরে যায়। এবার বন্যা হলে বালিজুড়ী ও পুরো সিধুলি ইউনিয়ন তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে ৫০ হাজার মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটির সংস্কারকাজ শুরু করেছেন।

ছায়ানীড় সংঘের সাধারণ সম্পাদক শিবলুল বারী বলেন, গত বন্যায় পানির স্রোতে বাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙে যায়। ওই সব স্থান মেরামত না হলে আগামী বন্যায় সর্বনাশ হয়ে যাবে। তাই গ্রামের লোকজন আলোচনা করে বাঁধটি নিজেরাই মেরামতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতে শতাধিক লোক এগিয়ে আসেন।

জানতে চাইলে ছায়ানীড় সংঘের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নাদাগাড়ী গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে যমুনা নদী। প্রতি বর্ষায় পানিতে পুরো গ্রাম তলিয়ে যেত। এরপর ২০০৪ সালে নদীর পাশ দিয়ে একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এরপর কেটে গেছে ১৪টি বছর। কিন্তু বাঁধটি আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে গত বন্যায় বাঁধটির দক্ষিণ পাশে ৫০০ মিটার ও উত্তর পাশের বিভিন্ন স্থানের মাটি সরে গেছে। আগামী বন্যায় ওই সব স্থান ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভেঙে গেলে পুরো গ্রাম প্লাবিত হবে। ফলে গ্রামবাসী মিলে বাঁধটি সংস্কার করছেন।