ভোটের জন্য বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে: কাদের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনী ইশতেহারে মুক্তিযুদ্ধকে যে রাখে, তা লোক দেখানো বিষয়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, ভোটের জন্য বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে।

আজ মঙ্গলবার ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি চেতনার অন্তরে মুক্তিযুদ্ধকে লালন-পালন করে না। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসেও বিএনপি বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করে না। কাদের বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এমন ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করতে পারে, তারা আর যা-ই হোক মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। এমন মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করেন না।

গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য শুনলেই মনে হয় যেন এই একটা আশ্চর্য তাঁর স্বর। যে স্বরে কথা বললে আমাদের (বিএনপি) অনেক উপকার হয়। তাঁর হিংসাত্মক যে বক্তব্য, সেই হিংসাত্মক বক্তব্যকে প্রতিহত করার একটা শক্তি অর্জন করে আমাদের নেতা-কর্মীরা।’

আজকের সভায় নোমানের নাম না নিয়ে তাঁকে ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামে কনিষ্ঠের (জুনিয়র) কাছে পদপদবি হারিয়ে ঢাকায় এসে আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করে যাচ্ছে ওই কথাগুলো বলে, যে কথাগুলো বললে তারেক রহমান খুশি হয়ে ওনাকে পদোন্নতি দিতে পারেন। কার মনে কী ব্যথা, কার মনে কী দুঃখ—আমরা বুঝি।’

কোটা সংস্কার আন্দোলন বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই আন্দোলনকে কীভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলন করা যায়, সে বিষয়ে লন্ডন থেকে ভিডিও আছে। এর জন্য আকাশে-বাতাসে টাকার ছড়াছড়ি। লন্ডন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য বার্তার পর বার্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত সাহসী ঘোষণার পর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের খুশি করলেও বিএনপি ও তার দোসররা একটুও স্বস্তি পাচ্ছে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, লন্ডন থেকে বিএনপি চালায় মামলায় দণ্ডিত ও পলাতক আসামি। আওয়ামী লীগ চালান বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশে থেকেই আওয়ামী লীগ চালান।

একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দলের নেতাদের দল গোছানোর পরামর্শ দেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ছোটখাটো সমস্যা সব দলে থাকে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। সদস্য সংগ্রহ অভিযান পুরোপুরি শুরু করতে হবে। কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে করে ফেলতে হবে। যেসব কমিটিতে সমস্যা হয়েছে, তাদের সময় দেওয়া হয়েছে কমিটি ঠিক করে ফেলার জন্য। তিনি আরও বলেন, একটি কমিটিতে এত বেশি পদ, নিচের দিকে নেতা-কর্মীদের জায়গা দিলে ক্ষতিটা কী? ছোট ছোট মনোমালিন্য নির্বাচনের সময় বড় বড় বিভেদের জন্ম দেয়।

অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এ দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় মানুষ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর জঙ্গিবাদ রুখে দেওয়ার আহ্বানে সবাই সাড়া দিয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে, এ দেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ঠিকানা হতে পারে না। বাংলাদেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। এ কারণে আজ বাংলাদেশ সম্মানের আসনে অবস্থান করছে।

আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, আবদুল মতিন খসরু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মহিবুল হাসান চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরু, দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।