ফারমার্স ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ: চিশতী ফের রিমান্ডে

গ্রেপ্তারের পর মাহবুবুল হক চিশতী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
গ্রেপ্তারের পর মাহবুবুল হক চিশতী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

ফারমার্স ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার ব্যাংকটির অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীকে (বাবুল চিশতী) ফের দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম ফাহ্দ বিন আমিন চৌধুরী এ অনুমতি দেন।

পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁকে আদালতে হাজির করে পুনরায় পাঁচ দিনের রিমান্ড নেওয়ার আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

একই মামলায় গ্রেপ্তার মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ব্যাংকের এসভিপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খানকে এর আগে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ১০ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর গুলশান থানায় চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় ওই চারজনের বিরুদ্ধে ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়।

ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনাটি গত বছর থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে মাহবুবুল হক চিশতী, তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য, ব্যাংকের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে গত সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুদক।

দুদকের তালিকায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নাম নেই। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ তদন্তে ব্যাংকটির সাবেক দুই শীর্ষ ব্যক্তির অনিয়ম তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটির গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী। এর মাধ্যমে দুজনের নৈতিক স্খলন ঘটেছে এবং তাঁরা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকটির জনবল নিয়োগ হয়েছে মূলত এ দুজনের (মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মাহবুবুল হক চিশতী) সুপারিশেই। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তাঁরা নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরসিএল প্লাস্টিকের সঙ্গে ব্যাংকের গ্রাহকদের অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্যও বেরিয়ে আসে।

২০১২ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন দেওয়া ফারমার্স ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। আস্থার সংকট তৈরি হলে আমানতকারীদের অর্থ তোলার চাপ বাড়ে। পরিস্থিতির অবনতি হলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী। পরিচালকের পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তাঁরা।