ঘরে-বাইরে সব দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করছে দুদক

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি

তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব গোয়েন্দাপদ্ধতি ও উপকরণ ব্যবহার করে ঘরে-বাইরে সব ধরনের দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির গোয়েন্দা শাখা দুর্নীতিবাজদের পাশাপাশি নিজেদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্যও সংগ্রহ করছে। আজ বৃহস্পতিবার দুদক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের সব সমন্বিত জেলা কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয় এবং প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় গোয়েন্দা শাখার এক কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সংগৃহীত একটি গোয়েন্দা তথ্য সবাইকে অবহিত করেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের গোয়েন্দা শাখা কেবল দুর্নীতিবাজদের পেছনেই গোয়েন্দাগিরি করবে না, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়েও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করবে। তিনি বলেন, প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্তের গুণগতমান এমন হতে হবে, যাতে প্রতিটি মামলায় প্রকৃত অপরাধীদের শতভাগ সাজা নিশ্চিত করা যায়।

কথিত পলাতক আসামিদের পরিসংখ্যান দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, আপনার বিভাগের দুদকের মামলার অনেক আসামিই আইন-আদালতে আত্মসমর্পণ না করে, আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কীভাবে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে? আপনাদের দায়িত্ব কী? আপনাদের পেছনে রাষ্ট্রের ব্যয়িত অর্থের মূল্য থাকলে, হয়তো এভাবে আসামিরা ঘুরে বেড়াতে পারত না। যে কোনো বিষয়ে কমিশন সর্বোচ্চ দ্রুততার সাথে সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে তা বাস্তবায়নে এত বিলম্ব কেন?

ইকবাল মাহমুদ বলেন, মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে এজাহারের কপি কমিশনের আইন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর পাঠাতে হবে, যাতে কমিশন মামলা দায়ের পরবর্তী সকল প্রকার আইনানুগ প্রক্রিয়া কার্যকরভাবে মনিটরিং করতে পারে। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। একটি লোককেও হয়রানির জন্য দুদকের মামলার আসামি করা যাবে না। চূড়ান্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের সময় নথিতে এজাহারে কপি সংযুক্ত করতে হবে। নির্ধারিত ছক অনুসারে অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হবে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কমিশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। এ প্রতারক চক্রের সদস্যরা কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছে। তাই এ বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়েও সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

সভায় দুদকের কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াতে হলে সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আরেক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, কমিশন অভিযোগ অনুসন্ধান বা তদন্তের গুণগত পরিবর্তন আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

পর্যালোচনা সভায় বক্তৃতা করেন দুদকের মহাপরিচালক (আইন) মঈদুল ইসলাম, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী, মহাপরিচালক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান, মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) আতিকুর রহমান খান, মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) জয়নুল বারী, পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক আক্তার হোসেন ও পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন প্রমুখ।