সুন্দরবনে ডুবে যাওয়া জাহাজটি উদ্ধারে এক মাস লাগবে

কয়লা নিয়ে পশুর নদে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ এমভি বিলাস। প্রথম আলো ফাইল ছবি
কয়লা নিয়ে পশুর নদে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ এমভি বিলাস। প্রথম আলো ফাইল ছবি

সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়ায় কয়লা নিয়ে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজটি উদ্ধারে অন্তত এক মাস সময় লেগে যেতে পারে। উদ্ধারের জন্য কিছু সরঞ্জাম বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে আনা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধারকাজ এখনো শুরু হয়নি।

গত শনিবার রাতে মোংলা সমুদ্রবন্দরের পশুর নদের হাড়বাড়িয়া এলাকায় ৭৭৫ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে এমভি বিলাস নামে লাইটার জাহাজটি ডুবে যায়। শুক্রবার সকাল থেকে জাহাজটির উদ্ধারকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কয়লা আমদানিকারক ও জাহাজের মালিকপক্ষ।

ডুবে যাওয়া জাহাজটি এখন ভাটার সময়ও আর দেখা যাচ্ছে না। এর আগে ভাটার সময় জাহাজটির মাস্তুলের কিছু অংশ পানির ওপর দেখা যাচ্ছিল। তবে বৃহস্পতিবার তা আর দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

উদ্ধারকাজের জন্য একটি বাল্কহেড, একটি ড্রেজার, লঞ্চ ও ডুবুরিদের নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়লা আমদানিকারক মেসার্স সাহারা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. লালন হাওলাদার। তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে জাহাজ থেকে কয়লা তোলা শুরু হবে। এরপর ওই কয়লা বাল্কহেডে রাখা হবে। এভাবে জাহাজের ওজন কমিয়ে হালকা হলে দুই পাশে দুটি খালি বাল্কহেড রেখে লোহার বিশেষ ধরনের রশির সাহায্যে ডুবে যাওয়া জাহাজটিকে নিচ থেকে পেঁচিয়ে টেনে তোলা হবে। যত দ্রুত সম্ভব এই উদ্ধারকাজ শেষ করা হবে। এ জন্য খুলনার বেসরকারি একটি উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। পানির চাপের কারণে জোয়ারের সময় কাজ করা সম্ভব নয়। কেবল ভাটায় কাজ করতে হবে।

এমভি বিলাস জাহাজের চালক মো. আনিস বলেন, উদ্ধারের জন্য ডুবুরি ও উদ্ধারকারী সরঞ্জাম হাড়বাড়িয়াতে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে উদ্ধারকাজ শুরু হবে।

উদ্ধারকাজ শেষ করতে কেমন সময় লাগতে পারে, এমন প্রশ্নে আনিস বলেন, ‘তা উদ্ধারকারী-ডুবুরিরাই ভালো বলতে পারবেন। তবে কয়লা তোলার পর জাহাজটি উদ্ধারের পুরো কাজ শেষ করতে সর্বনিম্ন এক মাস তো লাগবেই।’

সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগেও প্রতিটি দুর্ঘটনার পর নৌযান উদ্ধারে দেড় থেকে দুই মাসের বেশি সময় লেগেছে। সুন্দরবন যে একটি সংবেদনশীল বন, সেদিকে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। এর নদ-নদীতে ইরাবতী ডলফিনের বাস। প্রতিটি জাহাজডুবির পরই আমরা সংশ্লিষ্ট সবার উদাসীনতা দেখি। পত্রপত্রিকাতে লেখালেখির কারণে কিছুদিন তৎপরতা দেখা যায়। এরপর সব আবারও যা তাই হয়ে যায়।’

তবে কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের আশা, এক সপ্তাহের মধ্যেই উদ্ধারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. শাহিন কবির প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত উদ্ধারের কোনো ধরনের তৎপরতা চোখে পড়েনি। তাদের একটি লঞ্চ ও কিছু সরঞ্জাম ওই এলাকার কাছে আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, জাহাজটির কিছু অংশ আগে ভাটায় দেখা গেলেও এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না। ভারী জাহাজটি আরও দেবে যেতে পারে। পানিও কিছুটা বেড়েছে।