রাজাকারের সন্তানদের চাকরিতে অযোগ্য দাবি করেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের গণসমাবেশ। ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের গণসমাবেশ। ছবি: প্রথম আলো

চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে তা বাস্তবায়নে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন ‌‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’। বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারের সন্তানদের সব চাকরিতে অযোগ্য ঘোষণারও দাবি করেছে সংগঠনটি।

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক গণসমাবেশ থেকে তারা এ দাবি করে। সকাল সাড়ে ১০টা সমাবেশ শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয়।

গণসমাবেশে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা এখন থেকে বিসিএস প্রিলিমিনারি থেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা কার্যকর করাসহ নয় দফা দাবি তুলে ধরেন। তবে নতুন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা না করলেও নয় দফা দাবি আদায়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেন তাঁরা।

সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজী সাইফুদ্দিন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন, দপ্তর সম্পাদক আহমাদ রাসেল, শহীদ নুরুল হক হাওলাদারের মেয়ে জোবায়দা হক অজন্তা প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, তাঁরা এখানে করুণা নিতে আসেননি। তাঁদের পরিবারের রক্তের অধিকার নিতে এসেছেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের ষড়যন্ত্র তাঁরা বানচাল করে দেবন। তাঁরা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন কোটাপ্রথা বাতিল করার মতো সিদ্ধান্ত তাঁরা নিতে পারেন না।

আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের করা নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে জাতির পিতা, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করা ব্যক্তিদের শাস্তি, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ মুক্তিযোদ্ধা সুরক্ষা আইন।
এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চলমান সব নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কোটার শূন্য পদ সংরক্ষণ করে বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করার দাবি করা হয়। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করাসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের উত্তরসূরিদের সব চাকরিতে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় এবং স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করারও দাবি করা হয় আজকের সমাবেশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলাসহ দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী স্বঘোষিত রাজাকারদের কঠোর শাস্তির দাবি এবং সবার জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা তুলে দেওয়ার দাবি ছিল নয় দফা দাবির মধ্যে। এর পাশাপাশি ১৯৭২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটায় শূন্য পদগুলোয় চলতি বছরেই নিয়োগের দাবি জানানো হয়। তাঁরা দাবি করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন প্রবাসী সরকারের প্রথম সেনাবাহিনী। এ কারণে তাঁদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে পেনশন, বোনাস, রেশনসহ ওই মন্ত্রণালয়ের সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।