তিন দিন ধরে ২০ গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দুই ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে তিন দিন যাবৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। আজ রোববার বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখার সময় গ্রামগুলো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।

গত শুক্রবার দুপুরে কালবৈশাখীর আঘাতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তা মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে গ্রামগুলোর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে কালবৈশাখীর আঘাতে পুরো উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে প্রায় অর্ধশত দোকান, বাড়িঘর ও সহস্রাধিক গাছপালা ভেঙে গেছে। পরে গতকাল শনিবার দুপুরে আবারও ঝড় বয়ে যায় উপজেলায়। দুই দিনের ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নয়টি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। উজানচর এলাকায় তিনটি, দুর্গারামপুর এলাকায় চারটি এবং মধ্যনগর, শুটকিকান্দি ও বিষ্ণুরামপুর এলাকায় একটি করে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। এ ছাড়া পাহাড়িয়াকান্দি ও তেঁজখালী ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

তেঁজখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গেছে। এতে আমাদের ইউনিয়নের সব কটি গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় ইউনিয়নের জন্মনিবন্ধনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারছি না। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম সাহেবকে ফোন দিয়েছিলাম, তিনি বলেছেন লাইন চালু করতে চেষ্টা করছেন।’

পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গাজীউর রহমান বলেন, ‘শুটকিকান্দি গ্রামে বিদ্যুতের লাইনের ওপর গাছ পড়ে আমাদের ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।’

ইমামনগর গ্রামের বাসিন্দা জিন্নত আক্তার বলেন, তিন দিন ধইরা বিদ্যুৎ না থাকায় বাড়ির কাজকর্ম ও বাচ্চাদের পড়ালেখা হচ্ছে না। বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে কোন সময় ঠিক হবে কেউ বলতে পারেনি। ফ্রিজে রাখা খাবারও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বাড়াইচর গ্রামের মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি শুক্রবার থেকে পড়ে রয়েছে। অথচ কেউ কোনো খবরও নেয়নি। এই অচলাবস্থা কবে ঠিক হবে, তা আমরা জানি না।’


কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩-এর বাঞ্ছারামপুর অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. ইয়াহিয়া আকন্দ বলেন, ঝড়ে উজানচর ও দুর্গারামপুর এলাকায় সাতটি খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল এক দিন। শনিবার সকালে উপজেলা সদরে লাইন চালু করা হয়েছে। কিন্তু এদিন দুপুরে আবার ঝড় হলে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে এবং খুঁটি পড়ে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

মো. ইয়াহিয়া আকন্দ বলেন, উপজেলা সদরসহ বেশির ভাগ এলাকাতে বিদ্যুৎ চালু করা হয়েছে। তবে তেঁজখালী ও পাহাড়িয়াকান্দি ইউনিয়নে বিদ্যুতের লাইন মেরামতের কাজ চলছে।