আ.লীগ ও বিজেপির ঘনিষ্ঠতা অনেকেরই প্রত্যাশার বাইরে ছিল

>
  • বিজেপির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল রোববার ভারত গেছে।
  • বিজেপির সঙ্গে বিএনপির খোলামেলা সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি।

আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মধ্যে যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে, তা অনেকেরই প্রত্যাশার বাইরে ছিল। ভারতের সঙ্গে বিএনপির দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তুলতে হলে দলটির সঙ্গে জামায়াতের কী সম্পর্ক, সেটাও স্পষ্ট করতে হবে। এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নীতিনির্ধারণী মহলের ব্যক্তিরা।

বিজেপির সঙ্গে এখন আওয়ামী লীগ সম্পর্ককে কীভাবে দেখা হচ্ছে—এ প্রশ্নের জবাবে দলটির ভাইস প্রেসিডেন্ট বিনয় সহস্রবুদ্ধে বলেন, বস্তুত নরেন্দ্র মোদির আমলে আওয়ামী লীগ ও বিজেপির মধ্যে যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে, তা অনেকের অপ্রত্যাশিত ছিল।

আওয়ামী লীগ বা তার নেত্রী শেখ হাসিনা শুধু ভারতের কংগ্রেস বা নেহরু গান্ধী পরিবারে ঘনিষ্ঠ, এটাকেও শুধু মিথ বলে মনে করেন সহস্রবুদ্ধে। তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি, দলনেত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে ভারত বা ভারতীয়দের কাছের মানুষ, তাতে ভুল নেই। জীবনের একটি কঠিন সময়ে তিনি ভারতের সাহায্যও পেয়েছেন। কিন্তু সেটা যদি শুধু একটি দল বা পরিবারের ঘনিষ্ঠতা হিসেবে দেখা হয়, তবে তা মারাত্মক ভুল হবে। বছর দেড়েক আগে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শরিক হতে বিজেপির যে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় এসেছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন সহস্রবুদ্ধে।

বিজেপির পলিসি রিসার্চ সেলের অনির্বাণ গাঙ্গুলি মনে করেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উন্নতির প্রভাব পড়েছে দুই দেশের শাসক দলের মধ্যেও। বিজেপি অবশ্যই চায় যে বাংলাদেশে একটি যথাযথ নির্বাচন হলো, আর এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তি এগিয়ে যাক। যাতে ধ্বংসাত্মক শক্তিগুলো না থাকে, সেটাও চায় বিজেপি। তিনি বলেন, ‘অনেকের ধারণা ছিল আওয়ামী লীগ কংগ্রেসের খুব কাছের, ও রকম কিছু না। আমরা তো চাইব পররাষ্ট্রনীতিতে একটি ধারাবাহিকতা থাকুক। বিজেপিও আওয়ামী লীগকে, বাংলাদেশকে একইভাবে দেখে।’

বিজেপির সঙ্গে বিএনপির খোলামেলা সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন অনির্বাণ গাঙ্গুলি। তিনি বলেন, একটি বিষয় লক্ষ করবেন, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি যখন বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া তখন দেখাও করেননি। অনির্বাণ বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্কটা কী, তা একটু পরিষ্কার করা দরকার। এই জিনিসটা যতক্ষণ না স্পষ্ট হচ্ছে, ততক্ষণ অনেক কিছুই অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা একটা আঞ্চলিক সংযুক্ততার অংশ। সেখানে জামায়াতকে নিয়ে কী পরিকল্পনা, সেগুলো পরিষ্কার না হলে কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বা কৌশল করা যায় না। ফলে আমাদের সঙ্গে তাদের (বিএনপি) সম্পর্কটা কেমন হবে, তা নির্ধারণ করা যায় না।’

আওয়ামী লীগের নেতাদের আজ মধ্যাহ্নভোজের আপ্যায়ন করছেন বিজেপি নেতা ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। বাংলাদেশের এই নির্বাচনের পটভূমিতে ভারত প্রভাব খাটাতে উদ্গ্রীব কি না সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আগ্রহ নেই। আমরা এতে বিশ্বাস করি না। আমরা এটা কখনো করব না।’

বিজেপির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার ভারত সফরে গেছে। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।