তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে, অভিযোগ মির্জা ফখরুলের

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেছেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি। তিনি এ দেশের নাগরিক ছিলেন, আছেন ও থাকবেন।

কারাবন্দী দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ বুধবার আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। রাজধানীর নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে।

বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই নয়াপল্টনের সামনে জড়ো হন দলটির নেতা-কর্মীরা। আবার নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগেই এই কর্মসূচি শেষ হয়।

বিএনপির এই কর্মসূচিকে ঘিরে সকাল থেকেই নয়াপল্টনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। নয়াপল্টনের কার্যালয়ের পূর্ব দিকে একটি এপিসি ও প্রিজন ভ্যান রাখা ছিল।

দীর্ঘদিন পর কেন্দ্রীয় বিএনপি খালেদা জিয়া মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করল। এই কর্মসূচিতে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা। ছবি: প্রথম আলো
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আজ আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা। ছবি: প্রথম আলো

তারেক রহমান পাসপোর্ট জমা দিয়ে নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন—পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ করা হয়েছে। পাঠানো হয়েছে উকিল নোটিশও। আজ সেই পরিপ্রেক্ষিত মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরকার এখন নিজেই নিজের গহ্বরে পড়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যেখানে কেউ বাস করে না, স্যাঁতসেঁতে একটা ঘরের মধ্যে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে। কারাগারে প্রতিদিন তিনি অসুস্থ হচ্ছেন। ক্রমান্বয়ে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ছে। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‌‌‘‌‌‌‌গতকাল স্বজনেরা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমরা জানতে পেরেছি, তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে গেছেন, দ্বিতীয় তলায় থেকে নিচে নামতে পারছেন না।’

কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, এম জাহিদ হোসেন, আহমদ আজম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবেদিন ফারুক মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।

মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ।

বেলা সাড়ে ১১টার পর গ্রেপ্তার-আতঙ্কে কর্মসূচি থেকে চলে যাওয়া শুরু করেন অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মির্জা ফখরুল যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন উপস্থিত নেতা-কর্মীদের বেশির ভাগই নয়াপল্টন এলাকা ত্যাগ করেন।

বিএনপির এই কর্মসূচির কারণে সড়কে সীমিত আকারে যান চলাচল ছিল। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।